প্রচ্ছদ

করোনা কাব্য-৪

  |  ১৬:৫৯, অক্টোবর ২৪, ২০২০
www.adarshabarta.com

অচেনা ভূবনে

অধ্যাপক ডঃ হারুন রশীদ

দেখে যেন মনে হয়
চিনি তোমাকে, কবে কখন
কোথায় কীভাবে-
কোনো এক সুদূর অতীতে,
যখন আমরা মানুষেরা ছিলাম
মানব প্রজাতির আদলে-ছুরতে
হাবে-ভাবে,
রূপে-স্বরূপে-সৌন্দর্যে
দৃশ্যমান মুখায়ববসম্পন্ন
চিরচেনা চেহারায়।
অনুভূতিগুলো ছিল প্রকাশ্য
সংবেদনশীলতা ছিল অভিব্যক্ত
ভাবনাগুলো স্পষ্টরূপে প্রতিফলিত,
স্বচ্ছ জলের মতো মুখাবয়ব
খুব সহজেই বলে দিত
তুমি কে, কি তোমার পরিচয়।
আমরা অভ্যস্ত ছিলাম
সহজ-সরল-সাবলীল পাঠে
নিজেদেরকে নিজেদের মতো
চিনতে, জানতে,বুঝতে;
ভাব বিনিময় আর শব্দ,বাক্য
অথবা ভাষার কারুকার্যে
প্রাণবন্ত এক একটি মানব সত্তা,
এরিস্টটলীয় সংগায়
যুক্তিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণীর পরিচয়ে
পরিচিত, প্রকাশিত।
মানুষেরা আজ ক্লান্ত,পরিশ্রান্ত
দেহ-মনে বিধ্বস্ত, যন্ত্রণাক্লিষ্ট
অথবা দেহ-মনের সম্পর্ক স্থাপনকারী
কার্তেসীয় রহস্যময় শীর্ষক গ্রন্থীরূপী
প্রশ্নবোধক চিহ্নে বিভ্রান্ত, দিকভ্রান্ত-
যেন দুপেয়ে বুদ্ধিমান সত্তা
এক আচেনা রূপে দৃশ্যমান।
প্রকৃতি যেন অচেনা ভূবনে
যান্ত্রিক বিবর্তনের ধারায়
রূপান্তরের পথে,
মানব প্রজাতি জৈবিক বিবর্তনের পথে
প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়ায়
নব্য-স্বাভাবিক রূপে-
ভিন্ন আদলে রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে।
উত্তর খুঁজে পাই না
বিভ্রান্তির অতলে তলিয়ে যাই,
আংশিক সন্ধান মেলে
যন্ত্রসম ভার্চুয়াল মানুষের-
আংশিক প্রতীয়মান হয়
চারপেয়ে জন্তু বেশে
মুখে ঠুলি পরিহিত
মানবসদৃশ এলিয়েন রূপে,
বাকীটা অচেনা ভূবনে
আবির্ভাবের করোনাগাথা।

লেখক: দর্শন বিভাগ চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।