প্রচ্ছদ

রাজলক্ষ্মী মৌসুমী লিখেছেন, দেবী দর্শন-২

  |  ১৮:৫৮, জুন ১৬, ২০২০
www.adarshabarta.com

দেবী দর্শন-২

:: রাজলক্ষ্মী মৌসুমী ::

বিদেশ থেকে পড়াশুনা জানা একমাত্র ছেলে স্বাধীন। আজ তার নিজের কারনেই অন্ধ। তার জীবনে চাওয়া পাওয়া বলতে কিছু নেই। তার শুধু একটাই কাজ সারাদিন গান শোনা আর গান গাওয়া। স্বাধীনের বাবা মাও কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে গেছেন। তাঁদের অপরাধ কোথায় বুঝতে পারছেন না।
স্বাধীনের মা ছেলের মুখের দিকে তাকাতে পারেন না। কী ছেলে আমার কী হয়ে গেলো। এই কথা ভেবে ভেবে তিনি কষ্ট পাচ্ছিলেন। উনি মনে মনে ভাবছেন আমার জন্যই আমার ছেলের আজ এই অবস্থা। আমাদের অহংকার ও দাম্ভিক মনোভাবের জন্যই আজ আমার ছেলের এই পরিনতি।।

ঐদিকে স্নেহা খুবই সহজ সরল মেয়ে ছিলো। তার জীবনেও আরেক অধ্যায় শুরু হলো। সে কী করবে ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেনা। ১০/১২ দিন পরেই তার বিযের দিন। এত বড় বাড়ীর ছেলে আমার জন্য কিনা তার আজ এই অবস্থা? আমার তো কোন অপরাধ নেই। তবে কেনো উনি এমন কাজ করলেন।
শেষ পর্যন্ত স্নেহা তার মাকে বললো”” মা তোমরা আমাকে যদি এই বিয়ে দাও তাহলে আমি কিছুতেই সুখী হতে পারবো না। উনার মনের কষ্টেই আমি শেষ হয়ে যাবো””।
মা তুমি আমকে একটা কিছু বুদ্ধি দাও।
মাও নির্বাক মেয়েকে কি বলবেন কোন উত্তর দিতে পারলেন না। বিয়ের দিনেই অবশেষে বিয়ে হলো।বর যাত্রীদের মাঝে অনেক কথা বার্তা চলছিলো। এই কথা বার্তার মাঝেই স্নেহা যাত্রা করলো শ্বশুর বাড়ীতে। তার মনটা পরে রইলো এখানে। শ্বশুর বাড়ীতে সবার মুখে মুখে একি কথা।বরের পিসী তো জিজ্ঞেস করেই বসলো,তোমার জন্য একটা ছেলে চোখ নষ্ট করে ফেললো। তোমার সাথে কিছু ঘটনা ছিলো না কি? স্নেহা কী বলবে? বললেও তো বিশ্বাস করবে না। নীরবে সহ্য করলো সব কথা। বৌ ভাতে সবারই মন খারাপ। কোন রকমে শেষ হলো অনুষ্ঠান। স্নেহা বুঝতে পারছিলো সারা জীবন এই অশান্তি আমায় কষ্ট দেবে। সুখের মুখ জীবনেও দেখবো না।
স্নেহার বরও চুপচাপ কিছুই বলে না। মনে মনে শুধু চিন্তা করছে। স্নেহাকে সে জিজ্ঞেস করতে চায় আবার বলে না কিছুই। দুজনের মধ্যে বেশ দূরত্ব। স্বাভাবিক ভাবে কেউই কথা বলতে পারছে না।।
ফিরাযাত্রা করার পর চলে গেলো শ্বশুর বাড়ী। যত দিন যাচ্ছে ততই অশান্তির বেড়াজাল বেড়েই চলেছে। ৫/৭ মাস বিয়ে হলো বরের সাথে কোন কথা নেই স্নেহার। স্নেহা ভাবলো এভাবে আর চুপ থাকা উচিত নয়।
স্নেহা তার বরকে বললো, দেখো তুমি আমার কাছ
থেকেও কিছু জানতে চাইলে না,বা আমার বাবা মায়ের কাছ থেকেও জানলে না কিছু।আমার কোন দোষ আছে কিনা। তোমাদের তো জানতে হবে। এভাবে আমি তোমাদের বাড়ীতে থাকবো কিভাবে? স্নেহার বর হঠাৎ বলে উঠলো তুমি তাহলে চলে যাও? যেতে চাইলে যেতে পারো। স্নেহা বললো কী বললে? আমি চলে গেলে কী তোমাদের সমস্যার সমাধান হবে? ঠান্ডা মাথায় আবার স্নেহা বললো। আমি কি সত্যিই চলে যাবো? বরের পিসী বললো হ্যাঁ তোমার স্বাধীনদের বাড়ীতেই যাওয়া উচিত। চলে যাও।
স্নেহা যেনো আকাশ থেকে পরলো।কী বলবে না বলবে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েছিলো তার স্বামীর দিকে।
সপ্তাখানেক কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন পাড়ি দিয়ে তার স্বামীকে বললো আমি মায়ের কাছে যাবো।
যেমনি বলা তেমনি কাজ। বাড়ীর কেউ কোন আপত্তি করলো না। মনে হলো স্নেহা চলে গেলেই বাঁচে সবসই।
অবশেষে তার অল্প কিছু জিনিস পত্র নিয়ে চলে আসলো।
শ্বাশুড়ি মায়ের কাছে বিয়ের গয়নাগুলো ছিলো। সেগুলো না নিয়েই চলে আসলো। মনের মধ্যে একটা আশা ছিলো হয়তো কিছুদিন গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। অনেক দিন হয়ে গেলো কোন খবর নেই শ্বশুর বাড়ীর।
এর মধ্যে বরের ছোট ভাই স্নেহার বিয়ের গয়না গুলো তার মায়ের কাছে দিয়ে গেলো। স্নেহার মা বাবা তো অবাক। মেয়েকে ডেকে বললো কী হয়েছে তোর
শ্বশুর বাড়ীতে? যার জন্য সব কিছু দিয়ে পাঠালো?
স্নেহা বললো আমি জানিনা মা আমার কী অপরাধ?
ঐদিকে স্বাধীন সব জানতে পেরে কাউকে কিছু না বলে তাদের কাজের ছেলেকে নিয়ে স্নেহার শ্বশুর বাড়ীতে গেলো। সে সমস্ত ঘটনাটা ওদেরকে জানালো। বললো আমার ভুলের জন্য স্নেহা তো দায়ী নয়। স্নেহাকে বা ওদের বাড়ীর কাউকে আমি আমার মনের ইচ্ছা কিছুই জানাইনি। আমিই আমার নিজের ক্ষতি করেছি।তারপর সব কিছু জানার পর স্নেহার বর লজ্জ্বায় ঘৃণায় তার পরিবারের প্রতি ধিক্কার আসলো।এখন সে কী করবে?
মনে মনে ভাবলো সে স্নেহার কাছে তার পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইবে। স্বাধীন চলে গেলো। দুদিন পর স্নেহার বর আসলো স্নেহাকে নিতে। স্নেহা বাড়ীতে ছিলো না। চাকরি ইন্টারভিউ দিতে গেছিলো।
স্নেহার মা / বাবার কাছেই সব বললো। আমাদের ক্ষমা করে দেন। স্নেহার মা বাবা বললেন আমরা অসহায়। আমার মেয়ে যদি যেতে চায় বা রাজী থাকে তাহলে নিয়ে যাও।
ঠিক তখনি স্নেহা আসলো। ওদেরকে দেখলো কিন্তু কোন কথা না বলে তার ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলো। তার মা বাবা এত ডাকলো তবুও দরজা খুললো না। স্নেহার বর অনেকবার বলেছে দরজাটা খোল, আমাদের কথা শোন। কিছুতেই দরজা খুললো না। ওরা চলে গেলো সত্যি কিন্তু কয়েকবার আসছে নেয়ার জন্য। কোন কথা বললো না স্নেহা। এর মধ্যে ভালো চাকরীও পেয়ে গেলো স্নেহা। তারপর সে জানিয়ে দিলো আমি খেলার পুতুল নই। আমি জীবন্ত রক্ত মাংসে গড়া একজন মানুষ। অপমান বোধ আমার আছে।
আমি বার বার বুঝানোর চেষ্টা করেছি কেউ আমার কথার পাত্তা দেয়নি। আর শ্বশুর বাড়ীতে যাবার প্রশ্নই উঠেনা।
স্নেহা একটা প্রাইভেট ফার্মে বড় পদেই জয়েন করেছে। পরিবারের অভাব অনটনও অনেক দূর হয়েছে। ছোট ভাইটাও পড়াশুনার প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে আসছে।
স্নেহার মনে প্রায় সময়ই স্বাধীনের চোখ নিয়ে ভাবে।কোন উপায়ে যদি চোখটা ভালো করা যেতো?
অনেক বই পত্র ঘাটাঘাটি করে, বন্ধু বান্ধবের সাথে আলোচনা করে। স্নেহার ক্লাস মেইট একজন চোখের ডাক্তার কিন্তু সে থাকে বিদেশে। বন্ধুকে জানানোর পর
সে বুদ্ধি দিলো আগে ডাক্তার দেখাতে হবে। কারণ চোখের কি অবস্থা না বুঝে তো চিকিৎসা করানো যাবেনা। যদি চিকিৎসা করানো যায় তাহলে আমি বলে দেবো কোথায় দেখাতে হবে। বন্ধুর কথা শুনে সে এখন ভাবছে কিভাবে স্বাধীনকে বলা যায়। একদিন সাহস করে চলে গেলো স্বাধীনদের বাড়ীতে। যেতেই দরজা খুলে দিলো স্বাধীনের মা। একদম বুঝাই গেলো না উনি যে একসময় এত কঠিন মানুষ ছিলেন। কোন অহংকার নেই। স্নেহাকে নিয়ে উনি উপরের ঘরে যেতে চাইলেন। স্নেহা একটু কঠিন হয়ে গেলো বললো না মাসীমা আমি উপরে যাবো না। আমি আপনাকে একটা কথা বলতে এসেছি এখনি চলে যাবো।
কী কথা এইতো বলছি আপনি একটু বাইরে আসুন। তখনি স্বাধীনের বাবা আসলেন। খুব সদালাপী মানুষ বুঝা গেলো। স্নেহা না বসেই বললো মেসোমশাই আমি স্বাধীনবাবুকে ডাক্তারের কাছে নিতে চাই। আমাকে খুব অপরাধী মনে হয়। উনি বললেন, দেখো মা তুমি অপরাধী হবে কেনো? আমি অনেক চেষ্টা করেছিওর চিকিৎসার জন্য। যখন এক্সিডেন্ট হয় তখনি একটা কিছু করা যেতো কিন্তু সেতো কিছুই করতে দিলো না। কথাই শুনতে চায় না। দেখো মা তুমি যদি পারো।। মেসোমশাই আপনি আমার কথা বলবেন না ওকে, আপনি একটু জোর করে দেখুন ওকে ডাক্তার দেখানো যায় কিনা। না না মা তুমি গেলেই ভালো হবে।। স্নেহা বললো আপনি যখন বলছেন চোখটা ভালো হওয়ার আশা আছে তাহলে আমি একটু চেষ্টা করে দেখতে চাই।
কাল আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিতে আসবো।
ডাক্তার বন্ধুর সাথে কথা বললো কোথায় নেবে কি করবে সব জেনে আসলো। স্বাধীনদের বাড়ীতে কলিং বেল টিপতেই মাসীমা দরজা খুললেন।দরজা খুলেই বললেন আজ কিন্তু ঘরে এসে বসতে হবে। স্নেহা বললো ঠিক আছে মাসীমা। বসার ঘরে ঢুকেই দেখি সোফায়
বসা স্বাধীন। মেঘ না চাইতেই জল পেয়ে গেলাম। ওর পাশের সোফাটায় বসলাম।বললাম নমস্কার।আমি একটা কথা বলতে আসছি। কথাটা কিন্তু রাখতে হবে।
স্বাধীন এর কোন উত্তর না দিয়ে বললো, তুমি শ্বশুর বাড়ী যাওনি কেনো? আমাকে তুমি আরো ছোট করে দিলে। স্নেহা বললো এখন ওসব কথা থাক। আমি কেনো যাইনি আপনি একদিন বুঝবেন।এখন চলুন আমার সাথে।এক কথাতেই রাজী হয়ে গেলো স্বাধীন।
ডঃ নোমান এর চেম্বারে ঢুকতেই স্বাধীন বুঝে গেলোএই চেম্বারে সে আগেও তার বাবার সাথে আসছিলো কিন্তু কোন কথাই বললো না স্বাধীন। বাধ্য ছেলের মতো সব কথাই শুনে যাচ্ছে।।ডাক্তার বললেন স্বাধীন বাবু এই চিকিৎসাটা যদি তখনই করতেন তাহলে কত ভালো ছিলো। যাক দেখি এখন কী অবস্থা।
পরীক্ষা নিরীক্ষা হলো ২/৩ দিন পর রিপোর্ট দেবে।স্নেহার আর স্বাধীনের বাবা মায়ের কত আশা নিয়ে আছে। অবশেষে রিপোর্ট পেলো কিন্তু স্নেহাগরো জীবনটাই মন খারাপ না করে একটা চিন্তা নিয়ে সবার সামনে স্বাভাবিক হয়ে গেলো।
সে ডাক্তারের কাছে একা গিয়ে কথা বললো। স্নেহা বললো, আমি যদি চোখ দান করি? ডাক্তার রাজী হলেন না।। বললেন আপনার পুরো জীবনটাই তো পরে আছে তা কী করে সম্ভব। স্নেহা বললো আমার একটা চোখ দিয়ে নাহয় উনি দেখবেন।আমিও একটা চোখ দিয়ে দেখবো উনিও একটা চোখ দিয়ে দেখবেেন।
তারপর স্বাধীনকে নিয়ে তার বাবা মা আবার গেলেন হাসপাতালে। কিন্তু স্নেহাকে তারা খুঁজে পাচ্ছে না।
আর অপেক্ষা না করে অপারেশন শুরু করে দিলো।স্নেহা জানতেও দিলো না তার মনের কথা। অফিস থেকে ছুটি নিলো সে এই মহত্বের কাজ করার জন্য। দুজনেরই অপারেশন ভালো ভাবে হলো। স্নেহার ছোট ভাই জানে সব কিছু কিন্তু ,মা বাবা কিছুই জানেন না। আর ঐদিকে স্বাধীন এর বাবা মা বাইরে অপেক্ষা করছেন আর বলছেন স্নেহা কোথায় গেলো? অপারেশন হয়ে গেলো এখনও মেয়েটা আসলো না? যেদিন চোখ খুললো সেদিন সবাই স্নেহাকে খুঁজছিলো। ডাক্তার, স্নেহার ছোট ভাই, বললো ঢাকার বাইরে গেছে অফিসের কাজে। সবাই তাই বিশ্বাস করলো। ক’দিন পর স্বাধীন বাবা মায়ের সাথে বাড়ী চলে আসলো। মনটা তার অস্থির।একটা অজানা ভয়ে চিন্তায় ছিলো। সবাই শুধু বলছে স্নেহা আসছে না কেনো? কোন খবর নেই। ছোট ভাই বলছে সবাইকে দিদি অফিসের কাজে বাইরে গেছে।চলে আসবে তাড়াতাড়ি।
স্নেহা যে চোখটা স্বাধীনকে দিয়েছে সে চোখে পাথরের চোখ বসিয়েছে। বুঝা যায় না কিছুই। একদম সুস্থ হয়ে ডাক্তারের সাথে দেখা করতে গেলো স্নেহা। ডাক্তার বললেন, ম্যাডাম আপনার টাকাগুলো লাগেনি।এই ধরুন টাকাগুলো। আপনি বারণ করেছেন বলে ওদেরকে কিছু বলতেও পারিনি। তবে আপনি তো যে মহৎ কাজ করেছেন। উনাকে চোখ দান করেছেন।এমন কাজ কয়জনে করে বলুন? চলুন আমরা এখন স্বাধীন বাবুকে দেখে আসি।।
স্নেহা মনের লোভ সামলাতে পারলো না।ডাক্তারের কথায় রাজী হয়ে গেলেন। স্বাধীনদের বাড়ীতে যেতেই বাগানের মালী বাগান থেকে ফুলের তোড়া বানিয়ে আনলো। স্বাধীনের হাতে দিয়ে বললো দাদাভাই এটা দাও তুমি স্নেহাদিদিকে।।ঠিক সেই সময়ই ডঃ নোমান স্বাধীনকে বললেন আপনার চোখের অবদান কিন্তু স্নেহা ম্যাডামের। উনিই চোখ দিয়েছেন আপনাকে ।অপারেশনের টাকাও দিয়েছিলেন কিন্তু আমিই নিইনি।।কাকাবাবু যখন দিয়েছেন তাই আমি কিছু বলিনি। স্বাধীনের বাবা মা শুনে একেবারে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন স্নেহার দিকে। স্বাধীন এর বাবা মা এসে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরলেন।বললেন মা আমরাই আমার ছেলের জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। ছোট বেলা থেকে প্রতিবাদ করতে, নিজের অধিকার আদায় করে নিতে শিক্ষা দেইনি তাই আমরা নিজেরাই শিক্ষা পেলাম।ছোট বড় বলে কিছু নেই। তোমার কাছ থেকেই আমরা এ শিক্ষা পেলাম।
স্বাধীন এর বাবা স্নেহার হাতটা স্বাধীনের হাতের উপর রাখলেন। বললেন এই চিরবন্ধন আমিই করে দিলাম। আমার পুত্রবধু হওয়ার মতো যোগ্যতাা তোমার আছে মা।।
আমার সন্তানের সুখই আমার বড় সুখ।। স্নেহার বাবা মা সবাই শুনে খুশী।
স্নেহার অবদানের কথা শুনে সবাই অবাক।
স্বাধীন তার জীবনের আারাধ্য দেবীকে পেয়ে পরম সুখী,তাই ঈশ্বরকে সাধুবাদ জানালো।
আমার গল্পটিও শেষ হলো। ভালো থাকবেন।
(ধৈর্য্য ধরে পড়বেন কিন্তু)।