প্রচ্ছদ

জীবনের কথা, পর্ব-১১

  |  ১৭:২৩, জুন ১২, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual6 Ad Code

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ভাইস চ্যান্সেলরের সাথে আমি

:: মোঃ রহমত আলী ::

লেখাপড়ার জগতে বিশ্ববিদ্যালয় হলো সর্ব্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যারা পড়েছে তারা অনেকে জীবনে স্বার্থকতা অর্জণ করেছে। আমার বাবার আর্থিক অসচ্ছলতার কারনেই হোক বা আমার অক্ষমতার কারণে হউক, বিশ^বিদ্যালয় পর্যন্ত লেখাপড়ার সূযোগ আমার হয়নি। কিন্তু তা না হলেও যতটুকু অধ্যয়ন করেছি তাতেই আমি সন্তুষ্ঠ আছি। কারণ সবার জীবনে তো আর সবকিছু পূর্ণ হয় না। তবে বিশ^বিদ্যালয়ে যাওয়ার সূযোগ না হলেও কয়েকটি কারণে এ ব্যাপারে খুবই আশ^স্ত আছি যা আমার সে স্বপ্ন পূরণে কিছুটা হলেও প্রশান্তি দেয়। তার একটি হলো আমার অনেক সহপাঠি সে পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। দ্বিতীয়ত: আমার হাইস্কুল জীবনের অনেক ছাত্র বিশ^বিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করেছে এবং ভাল অবস্থানে চাকুরি করছে। তা ছাড়া বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষকের সাথে আমার চলাফেরা হয়েছে। অধিকন্তু যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি বা ভাইস চ্যান্সেলরের সাথে আমার সাক্ষাতের সূযোগ হয়েছে।

Manual2 Ad Code

Manual3 Ad Code

প্রথমেই আমি আলোচনা করবো যে বিশ^বিদ্যালয়ের অধিনে আমি ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়েছিলাম সে বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলন প্রফেসর আব্দুল মান্নান সাহেবের কথা। দিনটি ছিল শনিবার। তারিখ ছিল ৫এপ্রিল ১৯৯৭। সেদিন ইস্ট লন্ডনের ব্রিকলেনের একটি হলে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আব্দুল মান্নান সাহেবকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মো: ছালেহ আহমদের সভাপতিত্বে ও অভিজিত ধর বাপ্পির পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এ বিশ^বিদলয়েরই সিনেট সদস্য ও সাবেক ভিপি এস এম ফজলুল হক।
অনেকটা ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জনাব মন্নান সাহেবের কাছে বিশ^বিদ্যালয়ে সন্ত্রাস ও সেশনজট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তিনি তখন সুজাসুজি বলেন, এটা নিয়ে এককভাবে কাউকে দায়ি করে লাভ নেই, তা হলো দেশের সার্বিক অবস্থার প্রতিফলন। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তনি বলেন, একজন ছাত্রের পিছনে বিশ^বিদ্যালয় অনেক খরচ করতে হয় কিন্তু এখনও মাসিক বেতন ১৮টাকা করে প্রত্যেক ছাত্রের মাথাপিছু দেয়ার প্রথা প্রচলন রয়েছে। সুতরাং এ সমস্ত সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ অনুষ্ঠানে আমাকে নিয়ে যান আমার এক বন্ধু সে বিশ^বিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্রনেতা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ।
এর কিছুদিন পর যুক্তরাজ্য সফরে আসেন অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ। তাঁকে নিয়েও একটি মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয় ব্রিকলেনের একটি রেস্টুরেন্টে। এ সভার আয়োজনে মূখ্য ভুমিকা পালন করে সময় টিভির যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি সুয়েব কবির।

Manual2 Ad Code

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে খ্যাত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার বাসনা বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া সকল ছাত্রের মধ্যেই থাকে। হয়তো কেউ সূযোগ পায় কেউ পায় না। এ বিশ^বিদ্যালয়ে তিন জন ভিসির সাথে আমার পরিচয় ও যোগাযোগ বিভিন সময় হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো আমি যখন আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘বহির্বিশ্বে আলোকিত বাংলাদেশী’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব করি তখন এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ১২ মার্চ (২০১৬) ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে পোয়েটস ক্লাব আয়োজিত এই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ক্লাবের সভাপতি কবি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ঠ আইনজিবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, কবি মুহাম্মদ আবদুল খালেক, খন্দকার মোজাম্মেল হক (গেদু চাচার চিটি খ্যাত লেখক), ডা. সরোয়ার আহমেদ, সরকারী সংবাদ সংস্থা বাসস’র সাবেক প্রধান গাজীউল হাসান খানসহ অনেকে।
এর পর জনাব আরেফিন সিদ্দিক বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের জন্য ২৫টি বই সংরক্ষিত রাখেন যা ছিল আমার মত লেখকের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরপর আরো একবার ঢাকা গেলে তাঁর সাথে দেখা করে কোশল বিনিময় করেছি। তিনি তখন আমাকে অন্য সবার আগে সাক্ষাতের সূযোগ দান করেছেন। উল্লেখ্য, তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারী থেকে ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর পরবর্তীতে যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসাবে দায়িত্ব পালনে আসেন তিনি হচ্ছেন, অধ্যাপক এম আখতারুজ্জামান। আমি তাঁর সাথেও কিছু কাজে একবার সাক্ষাৎ করেছি। তিনি অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে আমাকে সহযোগিতা করেছেন এবং আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন। সাথে সাথে যে কোন সময় ঢাকা গেলে দেখা করার কথা বলেছেন।

Manual7 Ad Code

আমি অধ্যাপক ড. এমাজ উদ্দিন সাহেবের সাথেও সাক্ষাৎ করেছি। যিনি ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যাঞ্চেলর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে তাঁর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয় লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি একটি সভায় যোগদান করেছিলেন। আমাকে তখন তিনি দেশে গেলে সাক্ষাৎ করার জন্য বলেন। আমি তখন তাঁকে একটি দর্পণ ম্যাগাজিন প্রদান করি।
এদিকে বৃটেনে যদিও মাত্র একজন ভাউস চ্যাঞ্চেলারের সাথে আমার দেখা হয় তবুও তা ছিল একটি ঐতিহাসিক বিষয়ের প্রেক্ষাপটে। ক্রিসেন্ট এন্ড ডেল্টা নামে ইংরেজীতে লেখা বাংলাদেশের ইতিহাসের উপরে একটি বই লিখেন ডেভিট আর্চ এবং এটি ছাপা হয় বাকিংহাম ইউনিভার্সিটি প্রেসে। তারপর এর প্রকশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সে ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যাঞ্জেলর ডক্টর টেরেন্স কেলী। এ বইয়ের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন, দ্বীন মোঃ জুনায়েদ মিয়া এবং স্পনসরশিপের ব্যাপারে মূখ্য ভ‚মিকা পালন করেন দর্পণ ম্যাগাজিনের চিফ এডিটর ও বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি এলাইছ মিয়া মতিন। অনুষ্ঠানে আমার সাথে বিশিষ্ঠ কমিউনিটি নেতা ও সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী, নারী ম্যাগাজিন সম্পাদক শাহনাজ সুলতানা প্রমূখ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের তৎকালীন হাইকমিশনাও অতিথি হিসাবে যোগদান করেন।

লেখক: যুক্তরাজ্য প্রবাসী প্রবীণ সাংবাদিক ও দর্পণ ম্যাগাজিন সম্পাদক। ইমেইল: rahmatali2056@gmail.com

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code