প্রচ্ছদ

স্মৃতির পিঞ্জিরা, পর্ব-২

  |  ১৫:০৫, জুন ২৯, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual1 Ad Code

:: আবু সালেহ আহমদ ::

ভূতের কথা শুনলে কার না গাঁ শিহরিত হয়। ৮০র দশক ও তার পূর্বে মানুষের বদ্ধমূল ধারণা ছিল জঙ্গল থেকে ভূত পেত্নী এসে শিশু,মা, বোনসহ অনেকেরই ক্ষতি সাধন করে থাকে। আপতদৃষ্টিতে কিছু মানুষের ধারণা ছিল ভূতের কুদৃষ্টির কারণে তখন মানুষের অসুখ বিসুখ লেগেই থাকত। দূর থেকে আলোর ঝুপড়িকে মনে করা হত ভূতের বাতি। সেই সময়ের একটা ঘটনা আজ ও আমাদের হাসায়।

আশির মাঝামাঝি একদিনের একটি ঘটনা। রাত প্রায় ১২ টা আমরা চারজন জামিল ভাই, বখতিয়ার ভাই, পিন্টু এবং আমি কুতুবখানি থেকে কাদা এড়ানোর জন্য সহজ একটি রাস্তা জঙ্গলের ভিতর (জঙ্গলের ভিতর সরু একটি রাস্তা) দিয়ে শেখের মহল্লা আসার জন্য রওয়ানা দেই। জঙ্গলের মাঝামাঝি আসতেই উপর থেকে একটা শব্দ শুনা গেল। আমরা দিলাম দৌঁড়, কে কার আগে, বেশ কিছু জায়গা যাওয়ার পর বখতিয়ার ও জামিল ভাইয়ের সিদ্ধান্ত মতে পাশের বাড়ি থেকে লাইট ও লাটি নিয়ে বিষয়টি দেখার জন্য গেলাম জঙ্গলে। কারণ তখন ও বখতিয়ার ভাই অনেকটা ভূত বিশ্বাস করতো না। সবাই দোয়া দুরুদ পড়ে একজন অন্যজনকে ধরে ঘটনার উৎপত্তি স্থলে গেলাম গিয়ে দেখি একটা মড়া ডাল ভেঙে পড়েছিল। পরে আমরা একই সিদ্ধান্ত উপনিত হলাম যে আমাদের হাঁটার শব্দ শুনে সম্ভবতঃ ধনেশ পাখিটা উড়াল দিতেই হয়তবা ডাল ভেঙে মাটিতে পড়ে শব্দ হয়েছিল। পাশাপাশি পাখির উড়ালের শব্দকে আমরা ভূত আসার শব্দ মনে করে ছিলাম।
তখনকার সময় জঙ্গলাকীর্ণ স্থান ছিল বেশি। রাতের বেলা মানুষের চলাচল ছিল কম। সাহস করে পিছনের ঘটনা কেহ খোঁজ খবর করতেন না।
পর্যাপ্ত পরিমান ঔষধ না থাকায় রোগ শোক থাকতো বেশি।
তখন অসুস্থ হলেই ভূত পেত্নির আছর মনে করা হত।

Manual5 Ad Code

মূলতঃ ৯০ দশক ও তার আগে যক্ষা, ধনুষ্টংকার, ডিপথেরিয়া, ডায়রিয়া,নিউমোনিয়া, কালাজ্বর, হুপিংকাশি, হাম, বসন্ত রোগের টিকা ছিলনা। এসব কঠিন রোগ হলেই মানুষ মনে করতো ভূতে ধরেছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় টিকা দেওয়ার ফলশ্রুতিতে আস্তে আস্তে প্রাণঘাতী রোগগুলো দূর হতে থাকায় ভূতের বিশ্বাসটা ও ক্রমান্বয়ে দূর হতে থাকে।
(চলবে)।

Manual3 Ad Code

লেখক: কবি, কলামিস্ট ও লোক গবেষক।

Manual1 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code