প্রচ্ছদ

না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রিয় তোতা স্যার

  |  ১৫:৩৬, জুন ০২, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual3 Ad Code

:: সাইফুর রহমান কায়েস ::

Manual4 Ad Code

আমাদের শ্রদ্ধেয় ষ্কুল শিক্ষক নূরুল ইসলাম তোতা মিয়া স্যার আর নেই। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজেউন। মংগলবার (২ জুন ২০২০) বার্ধক্যজনিত রোগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর। তিনির মৃত্যুতে এলাকা তথা দেশে বিবেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমার শৈশব কৈশোরের স্মৃতি বিজড়িত, প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্টান চুনারুঘাট দক্ষিণাচরণ পাইলট হাইস্কুলের খ্যাতিমান শিক্ষক ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছর শিক্ষকতা করেছেন নিষ্টার সহিত। তিনি ছিলেন ইংরেজি শিক্ষক।

আমি গভির শোকাহত। ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে লিখছি। স্যারের কিছু স্মৃতি চারণ করছি। স্যারের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। হাতের লেখা শেখানোতে স্যার জোর দিতেন। আমাদের হোম ওয়ার্ক করতে দিতেন স্যার। ইংরেজী শেখানোতে স্যারের জুড়ি নেই। আমরা একে একে আমাদের শিক্ষকদের হারাচ্ছি। নূর স্যার,সামাদ স্যার বছর দেড়েক আগে চলে গেলেন। আর এখন গেলেন তোতা স্যার। আমাদের প্রেরণার বাতিঘরগুলো একে একে নিভে যাচ্ছে। এ বড় বেদনার ক্ষণ। আনাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন স্যার। আপনারা যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন স্যাররা। প্রিয়জনের বিদায় দিতে নেই। তারা আমাদের হৃদয়ে বেচে থাকবেন। তাদের প্রতিটি উচ্চারণ আমাদেরকে মানুষ হবার পথে প্রেরণা যুগিয়েছে। তাদের ঋণ আমরা শোধিবো কি দিয়া। চোখের জলে বিদায়। গুড বাই স্যার।

Manual7 Ad Code

Manual7 Ad Code

ছাত্র অন্তঃপ্রাণ এই মহান শিক্ষক ছিলেন আমাদের পিতৃতুল্য। তিনি আমাদের শিক্ষক এবং গুরু। জীবন গঠনে এবং জীবন যাপনে তার প্রভাব আমাদের উপর পড়েছে। তিনি ছিলেন নিভৃতচারী এবং প্রচারবিমুখ। জনকোলাহল তিনি সযত্নে এড়িয়ে চলতেন। স্যারের গন্তব্য ছিলো ষ্কুল আর ক্লাসে পাঠদান। এর বাইরে স্যারকে খুব দেখা যেতো বলে মনে পড়ে না।

আমাদের সুন্দর হস্তাক্ষর চর্চায় উৎসাহ দিতেন। ইংরেজী লেখা অভ্যাসের জন্য জোর তাগিদ দিতেন। তিনি ছিলেন আমাদের ইংরেজী ক্লাসের গুরু। পড়া না পারলে স্যার আমাদের শাসাতেন। রাগ একটু বেশি ছিলো কিন্তু ভেতরটা ছিলো শিশুর মতো নরম। আমাদেরকে জীবনেব সঠিক তরিকা বেছে নেবার শিক্ষাই তিনি দিয়ে গেছেন। আমরা স্কুল ছেড়েছি ১৯৯১ সালে এসএসসি পাশের পর। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টীয় সন পর্যন্ত ৫টি বছর স্যারের প্রযত্ন ছায়ায় ছিলাম আমরা।

আমার শ্রদ্ধেয় বাবা মাঝে মাঝে ষ্কুলে যেতেন আমার পড়ার খবর নিতে। বাবা তাকে ভাই বলে সম্বোধন করতেন। কারণ শিক্ষাজীবনে স্যার বাবার চেয়ে সিনিয়র ছিলেন। আজ যখন এই লেখাটি লিখছি তখন স্যার পরপারে চলে গেছেন আর বাবা তো সাতাশ বছর আগেই অকালে মারা গেলেন। মানে তাদের দুজনের কেউওই আর এই সংসারে বেচে নেই। আমার চোখ দুটি জলে ভরে উঠছে। নিজেও যখন বিশেষ করে মৃত্যুপথ যাত্রা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। দ্বিতীয়বার জন্মে আবার শোকের সায়রে ভেসে গেলাম। এটা কাম্য ছিলো না।

স্যারের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আল্লাহ পাক আমাদের স্যারকে জান্নাতের মেহমান হিসাবে কবুল করুন। আমিন।

লেখকঃ কবি ও প্রাবন্ধিক
উপদেষ্টা সম্পাদক, শব্দকথা।

Manual8 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code