প্রচ্ছদ

সন্তানের ভালোবাসা: একজন বাদশার প্রার্থনা

  |  ১১:৫৬, অক্টোবর ২১, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual2 Ad Code

:: আবুসালেহ আহমদ ::

Manual2 Ad Code

সম্রাট বাবরের নাম আমরা কে না জানি! তিনি ছিলেন মোঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর পুরো নাম জহিরুদ্দীন মুহাম্মদ বাবর। ১২ বৎসর বয়সে ১৪৯৪ সালে তিনি ফরগানার (উজবেকিস্থান) ক্ষমতা দখল করেন। তার রাজ্য শাসন নিয়ে অনেক চমকপ্রদ কাহিনি রয়েছে। তিনি রাজ্যবৃদ্ধি, শিক্ষা ও ইসলাম প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তিনি ৯টি বিয়ে করেছিলেন এবং ১৫জন সন্তানের জনক হয়েছিলেন। তিনি সাঁতরিয়ে অনেকবার নদী পার হয়েছিলেন। আবার কাঁধে দু’জন মানুষ নিয়ে অনায়েসে দৌঁড়ে যেতে পারতেন। সম্রাট হূমায়ন ছিল তাঁর বড় ছেলে। ছেলেকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। ছেলে হুমায়ুনের ও বাবা বাবরের জন্য ছিল অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও আনুগত্য। আমরাও তো সবাই সন্তানকে স্নেহ করি, সন্তানের সুখ শান্তির জন্য ভুড়িভুড়ি টাকা সঞ্চয় ও প্রাসাদ তৈরি করি। প্রিয় সন্তান অসুস্থ হলে কতোনা আহাজারি করি, চিকিৎসার যেন শেষ নেই। কি না করি সন্তানের জন্য।

মোঘল সাম্রাজ্যের দ্বিরাজ বাবরের ব্যাপারটি নিয়ে ইতিহাস রয়েছে,একটু ব্যতিক্রম ধর্মী আলোচনা। তাঁর প্রাণপ্রিয় ছেলে হুমায়ুন যখন অসুস্থ্য রাজ্য জুড়ে কোনো ডাক্তার কবিরাজ বাকি রাখলেন না। অনেক চিকিৎসার পর ও হুমায়ুন যখন সুস্থ হচ্ছেন না তখন তিনি ঘাবড়ে গেলেন। শেষ পর্যায়ে তিনি সিংহাসন ছেড়ে ছেলের পাশেই বসে থাকতেন। এক পর্যায়ে যখন সুস্থতার লক্ষ্মণ দেখা গেল না। রাজ্যের প্রধান জোতিষীকে ডাকলেন রাজ দরবারে। জৌতিষী বললো,” আপনার প্রিয় জিনিসটি আপনার ছেলের নামে উৎসর্গ করতে আপনার কৃপা হয়”। গভীর রাতে তিনি ধ্যানে বসে অনেক চিন্তার পর দেখলেন, পৃথিবীতে নিজের জীবনের চেয়ে প্রিয় কোনো বস্তুতো আর হতে পারে না। তাই আমার জীবনটাই ছেলের জন্য উৎসর্গ করে দিব।

গভীর রাত, আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলেন হে আল্লাহ, “আমার চেষ্টা সাধনা শেষ করে আমি এখন প্রিয় সন্তানের জন্য আমার জীবনটাই আপনার কাছে সঁপে দিলাম। আপনি আমাকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়ে যান, আমার ছেলেটাকে সুস্থ করে দিন। আমি জানি সর্বশেষ তুমি আল্লাহ ছাড়া আমাদের কারো কিছু করার থাকে না। হে আল্লাহ…….।”

Manual1 Ad Code

এভাবে কয়েকদিন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে লাগলেন। কিছুদিনের মধ্যেই সম্রাটের প্রিয় পুত্র হুমায়ুন সুস্থ হতে লাগলেন। পক্ষান্তরে মোঘল সাম্রাজ্যের রাজা দ্বি-পতী জহিরুদ্দীন বাবর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং কিছুদিনের মধ্যেই সবাইকে অবাক করে চলে যান পরপারে। ১৫৩০ সালে ৪৭ বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বস্তুতঃ আল্লাহ ত্যাগী, ধৈর্যশীল ও শ্রদ্ধাপরায়ণ মানুষকেই অত্যাধিক ভালবাসেন।

Manual1 Ad Code

লেখক: বহু গ্রন্থ প্রণেতা ও লোক গবেষক।

Manual2 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code