প্রচ্ছদ

প্রবাসী ভাইদের কষ্ট ও কিছু কথা

  |  ২১:২৯, এপ্রিল ২৬, ২০২০
www.adarshabarta.com

আবু সালেহ আহমদ

এক প্রবাসী বন্ধু, দুঃখ ভরাক্লান্ত মনে ফোন করে বললো “তাদের গালাগালি না করে দোয়া করার জন্য”। তারা নাকি কষ্টে আছেন। বন্ধি জীবন তাদের দূর্বিষহ করে তুলেছে। এই মহামারীতে খেতে ইচ্ছে হয়না। রাঁধে একবার, তিনবার খায়। যখন শুনে মৃত ব্যক্তি বা লাশ কাউকে দেখতে দেয়না। লাশ দাফন কিভাবে হয় তাও কাউকে কিছু বলা হয়না। তখন কান্নায় তাদের বুক ভেসে যায়। একজন আরেকজন পানি দেওয়ারও শক্তি পায়না। কখন জানি কার মৃত্যু হয়। ঘর থেকে বেরুলেই বিপদ। বাড়িতে টাকা পাঠানের চিন্তাতো আছেই।

সোনার হরিণকে ধরতে যাওয়া, পরিবারের সুখ শান্তির জন্য নিজে খেয়ে না খেয়ে, হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করা প্রবাসিরা না জানি কতো যে আতঙ্ক আছেন।

প্রবাসিদের বলছি, আমাদের নবী করিম সঃ বলেছেন “মহামারীতে তোমরা স্হান ত্যাগ করোনা।” তারপরও আবেগে এসময়ে যারা দেশে আসছিলেন তারা ধৈর্য্য ধারণ করে ঘরে থাকলে আমাদের শংকা কেটে যেত। আপনজন গালি দিতে পারেনা। তোমরা হয়তঃ ভাবতে পার আমরা পরিবার নিয়ে সুখে আছি। ইচ্ছে করলেই সবার সাথে দেখা করতে পারি। কিন্তু না, তোমাদের রেখে আমরা কতটুকু সুখে থাকবো। যেখানে তোদের পয়সায়, চাল আসতো,কাপড় সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কেনা হত। ঘরের অর্ধেক কাজটা তোমাদের টাকার জন্যই আটকিয়ে আছে অনেক অনেক পরিবারের। তোমাদের দূরে রাখার এই কষ্টের কথা মনে হলে দম বন্ধ হয়ে আসে সকল মা বাবারই। আমি জানি অনেক মা বাবা কাঁদে কাঁদে বুক ভাসিয়ে ফেলছেন তার প্রিয় সন্তানের জন্য। ফেলবার ই তো কথা।
করোনা (কোভিড ১৯) যার ভয়ে এখন পৃথিবীর মানুষ আতঙ্ক ও হতাশা গ্রস্থ । দেশে বড় বড় শপিংমল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেমন মানুষ কমে গেছে। তেমনি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে পৃথিবীর সব কিছুই আজ স্থবির।

যুদ্ধছাড়াই আজ মহাবিশ্ব অবরুদ্ধ। কেহ লক ডাউন করতে হয়নি। বিমান,গাড়ি ঘোড়া, বাস, ট্রাক,যেমন থমকে গেছে। তেমনি বিয়ে শাদী,ব্যবসা বাণিজ্য, পার্ক, ভ্রমণ, শিক্ষালয়ে দৈনন্দিন কার্যক্রম করতে মানুষ মানসিক ভাবে অসহায় ও ভীতগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করছে। দীর্ঘ দিন ধরে থামছে না এ যাত্রার মিছিল!

কি আর করবা। আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। তোমরাও তওবা,নামাজ রোজা,যিকর করে এই বন্দি জীবন পার কর। আমরাও অন্তর থেকে দোয়া করি আল্লাহ যেন তোমাদেরকে সুস্থ রাখেন এবং পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনেন।

লেখক: কবি, কলামিস্ট ও লোক গবেষক