প্রচ্ছদ

লক ডাউন নয় কারফিউ চাই

  |  ১১:৩১, মে ২৪, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual4 Ad Code

কাজী শাহেদ বিন জাফর

করোনা নিয়ে আজ আতংকিত সারা বিশ্ব। মৃত্যুর জোয়ার বহে চলছে আমেরিকা, ইউরোপের মতো উন্নত দেশ সমুহে। বেড়েই চলেছে অসহায় মানুষের আকুতি। কোথাও বাঁধ দেয়ার মতো প্রতিষেধক মিলছে না। আটকানোর মতো কোনো ব্যবস্থাপত্রের সুখবর পাওয়া যাচ্চে না এখনো । থামছে না মৃত্যুর মিছিল। তাই মানুষের মধ্যে বিনাশের আতংক বেড়েই চলেছে। এ আতংকে আতংকিত আমাদের বাংলাদেশও কোনো অংশে কম নয়। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই করোনাভাইরাসটি ভয়াবহ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।।

এই করোনা কে আটকানোর একটাই পথ রাস্তায় বের না হওয়া। ঘরেই থেকে স্বাস্হ বিধি পালন করা। তার সাথে কিছু বিধি নিষেধের জারী করা হয়েছে।

Manual2 Ad Code

বৈশ্বিক মহামারি করোনায় আতংক নয় সচেতনতাই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে জীবন বাঁচানোর বলয়। যার ফলে সরকার দেশ জুড়ে লোক ডাউন করে বিমান, ট্রেন সহ যাত্রী বাহী সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। করোনার করুন ও ভয়ংকর আক্রমণ ও সংক্রমণ হতে জনসাধারণকে রক্ষার জন্য। এতো কিছু করার পরও মানুষকে আটকানো যাচ্ছেনা। তথাপি আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার অন্ত নেই। সারাদেশ লক ডাউন করে সকল ধরনের দোকান পাট বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। অতি জরুরি ঔষধ, কৃষিজ ও মোদির দোকান ব্যতীত। এছাড়াও সকল প্রকার সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দেশবাসীকে যে বা যারা যে-অবস্থায় আছেন সে অবস্থায় নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করার জন্য। কেউ যেন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ বারবার জানান দেয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সতর্ক সংকেত, সাবধানতা ও সচেতন থাকার জন্য হরদম প্রচার করে আসছে। সরকারি বিধি নিষেধ মেনে চলার জন্যে সারা দেশে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মানুষকে করোনার আক্রমণ হতে রক্ষার জন্য ঘরমুখি করতে। অসহায়দের আহারের জন্যে সরকারের বিভিন্ন তহবিল হতে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে দেদারসে। এতে রাষ্ট্রের কি পরিমান ক্ষতি বহন করতে হচ্ছে, তা আগামী ৫০ বছরে পুরণ হবে কী না সন্দেহ রয়েছে। তথাপি এক শ্রেণীর নির্বোধ মানুষ গুলো হাটে বাজারে, রাস্তা ঘাটে বেকার জটলা বেধে আড্ডা দিয়েই যাচ্ছে। এসব দেখে মনে হয়, মরার প্রতি মানুষের ভয় বিন্দু মাত্র নেই! অথচ করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক রোগ, পরিবারের একজনের হলে, তাকে ত্যাগ করে সবাই ( শত্রু হয়ে ) পালিয়ে বেড়ায়।

সম্প্রতি জানা গেছে, কোনো এক মায়ের এই রোগে আক্রান্ত হলে ঐ-মা কে তার সন্তানরা জনহীন জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যায়। এছাড়াও আমাদের দেশে এধরনের বেশ ক’টি ঘটনা ঘটেছে যে, ইতালি থেকে একজন প্রবাসী এসে আপন ঘরের দরজা বা গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ভেতরে থাকা আপনজনকে অনেক ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে হাউমাউ কাঁদলেও তারা গেইট খুলে ভেতরে ডুকতে দেয়নি। পরে পুলিশ বিষয়টি জানতে পেয়ে নিজ হেফাজতে নিয়ে চলে যায়। অথচ এই পরিবার লালন পালনে তার শ্রম খেয়ে পরে গাড়ি বাড়ির মালিক হতে সক্ষম হয়েছেন। হায়রে জীবন ও জীবিকা! মহামারির ভয়ংকর ভয়ে আদরের সন্তান হতে পিতা মাতাকে, ভাই বোন হতে, বন্ধু বন্ধু হতে ( শত্রু বানিয়ে ) আলাদা করে দেয়। এরপরও ইদানীং লক ডাউন একটু শিথিল করার দৌলতে, কিছু নির্বোধ ও বেশামাল মানুষ তথা পুরুষের চেয়ে নারীরাই দেখা যায়, বাচ্চা কাচ্চা, শিশু সহ বিপনি বিতানে ঝাঁক বেধে কেনাকাটায় জটলা বেধে মেতে উঠেছে। এদের মধ্যে না আছে সামাজিক দুরত্ব, না মানছে সরকারি বিধি নিষেধ। এরা বুঝতেই পারছেনা যে, তারা দেশ জাতি ও পরিবারের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনছে। আল্লাহ না করুক এদের কারণেই মহামারি করোনা রোগ সারা দেশে সংক্রামিত হতে পারে। ফলে দেশের মানুষ যেখানে সেখানে, ঘরে বাইরে পরে মরে থাকবে, অথচ দেখার কেউ থাকবেনা।

Manual6 Ad Code

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ১৫৩২ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৬১০। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন আরো ২৮ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৮০।

চব্বিশ ঘণ্টায় ৪১৫ জন মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৯০১ জন। দেশে করোনা শনাক্তের বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০.৫ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১.৪৩ শতাংশ।

রোববার (২৪ মে ২০২০) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাই বুলেটিনে এ সকল তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

Manual5 Ad Code

এসময় যারা দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। বুলেটিনে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এপ্রিলের শুরু থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা।বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ।

অন্যদিকে করোনায় বিশ্ব পরিস্থিতিতেও তেমন একটা উন্নতি নেই। বিশ্বে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ৫৪ লাখ ৮ হাজার ১৮৭ জনের শরীরে। এছাড়া এতে মারা গেছেন ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪১ জন। ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন ২২ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৬ জন।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

এদিক বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয়ে বিনয়ী আব্দার লক ডাউন নয় কারফিউ জারি করার প্রয়োজন মনে করছেন সচেতন নাগরিকগণ। কারণ আমরা জাতে বাঙ্গালী, নীতি কথায় আমাদের হুঁশ হয়না। পিটানি বা ধাক্কা না খেলে হুঁশ ফিরে আসে না। তাই সেনাবাহিনীর আইন প্রয়োজন। যা আয়ূব সরকার জানতেন । এই আইনে আমাদের শাসিয়ে শাসন করে ছিলো ২৪টা বছর। এজন্যই আবারও বলছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লক ডাউন নয় কারফিউ জারি করা প্রয়োজন। করোনার মতো করুন আক্রমণ হতে জনসাধারণকে বাঁচানোর জন্য। বিষয়টি বিবেচনায় এনে একটু ভাবিয়ে দেখবেন। এই আশাবাদ ব্যক্তকরে আপাতত ইতি দিলাম।

লেখক: কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক

Manual2 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code