প্রচ্ছদ

স্বরণীয় : একজন মহৎ ব্যক্তি মাওলানা রফীক আহমেদ (রহঃ)

  |  ১৫:৪৭, মে ০৬, ২০২৪
www.adarshabarta.com

আমিন উল্লাহ আখতার :
মাওলানা রফীক আহমেদ (রহঃ) একজন সৎ সাহসী, পরহেজগার,স্পষ্টবাদী, পর হিতৈষী, সমাজসেবক মানুষ হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন।
জন্ম : ১৯৪৮ ইংরেজি সালের ২০শে অক্টোবর রোজ শুক্রবার বিকাল ৬ টায় সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ৮ নম্বর ঝিঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভদ্রচটি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন : গাছবাড়ি মোযাহিরুল উলুম মাদ্রাসায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করেন। এরপর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের জন্য সিলেটের তৎকালীন ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া হুসাইনিয়া আরাবিয়া রাণাপিং মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে কৃতিত্বের সাথে লেখা পড়া করে দাওরায়ে হাদীস (টাইটেল) পাশ করেন।
কর্ম জীবন : বিভিন্ন মসজিদে অত্যন্ত সুনামের সহিত প্রধান ইমামের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রবাস জীবন : তিনি কয়েক বছর মসজিদে ইমামতি করার পর সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সৌদি আরবে কয়েক বছর চাকুরি করার পর প্রিয় মাতৃভূমি ও মানুষের ভালোবাসার টানে প্রবাস জীবন ছেড়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করে সমাজ উন্নয়নমুলক বিভিন্ন কার্যক্রমে নিজেকে আরও বেগবান করেন।
সমাজ সেবা : এলাকার নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণের ন্যায্য বিচার, সালিশ নিষ্পত্তি নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে স্হানীয় বিচারিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করে একেরপর এক তথাকথিত মুখোশ পরা ঘুষখোর সালিশদের মুখোশ উম্মোচন করে গরীব দুঃখী মানুষের মলিন মুখে হাসি ফুটান তিনি। গাছবাড়ি টু হরিপুর রাস্তার সংলগ্ন ৬ একর মূল্যবান জমি (এলাকার সর্বসাধারণের) এলাকাবাসীর অনুরোধে নিজের টাকা খরছ করে থানায় মামলা করে ঢাকনাইল এলাকার চিহ্নিত ভূমিখেকো চক্র কর্তৃক দখলকৃত জায়গা জমি উদ্ধার করে দেন তিনি।
প্রসংগ উল্লেখ্য, এলাকার কতিপয় মুরব্বিরা জায়গা উদ্ধার হওয়ার পর টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও মামলার খরছের টাকা আজও পরিশোধ করেননি।
জালিয়াত ও ভূমিখেকো চক্রের সদস্যরা তিনির ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে সংবদ্ধভাবে এক ডজন বানোয়াট,উদ্দেশ্যমুলক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে এবং পরিবার পরিজনদের আর্থিক, মানষিকভাবে হয়রানি করা হয়। লোকমুখে শোনা যায়, হয়রানিমূলক এসব মামলার বড় অংকের টাকার যোগানদাতা ছিলেন ভদ্রচটি গ্রামের জনৈক আমেরিকা প্রবাসী। ডজন খানেক হয়রানিমুলক মামলার খরচ যোগান দিতে গিয়ে মাওলানা রফীক আহমেদ (রহঃ) নিজের প্রায় ৪ একর মূল্যবান জায়গা-জমি বিক্রি করতে বাধ্য হ্যয়েছিলেন। স্থানীয় এলাকায় তৎকালীন প্রচলিত বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ, কুসংস্কার প্রতিরোধে মাওলানা রফীক আহমেদ অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন।
মৃত্যু : ২০১৫ ইংরেজি সালের ২১ শে নভেম্বর রোজ শনিবার সকাল আনুমানিক ৮ টায় ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহিরাজিউন। “রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সখীরাহ্”।
আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আ’মিন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
লেখক : আমিন উল্লাহ আখতার। মরহুমের দ্বিতীয়তম ছেলে, সৌদি আরব প্রবাসী।