প্রচ্ছদ

আজ পবিত্র আশুরা

  |  ০৯:২৯, আগস্ট ২০, ২০২১
www.adarshabarta.com

Manual8 Ad Code

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

Manual1 Ad Code

আজ ১০ই মহররম। পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয় মুসলিমবিশ্বে।

করোনার কারণে গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হবে। এদিন সরকারি ছুটি।

Manual7 Ad Code

পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র আশুরা অত্যন্ত শোকাবহ, তাৎপর্যপূর্ণ ও মহিমান্বিত একটি দিন। বিভিন্ন কারণে এ দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, পবিত্র ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমরা এক সংকটময় সময়ে আশুরা পালন করছি। করোনাভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। আল্লাহ বিপদে মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করেন। এ সময় সবাইকে অসীম ধৈর্য নিয়ে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল মনে একে অপরকে সাহায্য করে যেতে হবে।

ইসলামি পরিভাষায়, মহররমের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলে। সৃষ্টির শুরু থেকে এ দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

Manual6 Ad Code

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবার পবিত্র মহররম উপলক্ষে সব ধরনের তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল বন্ধ থাকবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এর আগে আরোপিত বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।

সেইসঙ্গে পবিত্র মহররম উপলক্ষে সকল প্রকার তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে। তবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণপূর্বক আবশ্যক সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হবে।

হিজরি ৬১ সনের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ১০ মহররম ইরাকের কুফা নগরের অদূরে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে সঙ্গী-সাথিসহ নির্মমভাবে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.)। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইমাম হুসাইন (রা.)-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে।

আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত স্বীয় কুদরতে কালেমার নিদর্শন স্বরূপ বেশ কিছু দিন ও রাতের সম্মান ও মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রথমত, আশুরার দিন পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা পবিত্র লাওহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্ট জীবের রূহ পয়দা করেছেন। সমস্ত দুনিয়ার নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর এই দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। মানব জাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-কে আল্লাহপাক এই দিনেই পয়দা করেছিলেন। এই দিনই আল্লাহপাক তাঁর তাওবাহ কবুল করেছিলেন। একই দিন তাঁকে জান্নাতে দাখিল করেছিলেন। দরবারে এলাহীতে বহু কান্নাকাটির পর এই তারিখেই আল্লাহপাক হযরত ইদ্রিস (আ.)-কে সশরীরে জান্নাতে নিয়ে গেছেন। এই দিনই হযরত নূহ (আ.) এবং তাঁর অল্প সংখ্যক ঈমানদার উম্মতগণ অল্প কয়েক দিনের রসদপত্র নিয়ে কিস্তিতে সওয়ার হয়েছিলেন এবং তুফান হতে মুক্তিলাভ করেছিলেন।

এই দিন আল্লাহপাক হযরত ইব্রাহিম (আ.)-কে পয়দা করেছিলেন এবং এই দিনই তিনি নমরূদের অগ্নিকুন্ড হতে নাজাত লাভ করেছিলেন। এই দিনেই হযরত মূসা (আ.) তুর পর্বতে আল্লাহপাকের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন এবং তাওরাত কিতাব লাভ করেছিলেন। আর এই দিনই পাপিষ্ট ফেরাউন নিজের দলবলসহ হযরত মূসা (আ.)-এর পশ্চাধাবন করতে গিয়ে ‘বাহরে কুলজমে’ ডুবে ধ্বংস হয়েছিলেন। হযরত আইয়্যুব (আ.) এই দিনে রোগ হতে মুক্তি লাভ করে ধন-সম্পদ ফিরে পেয়েছিলেন। হযরত ইয়াকুব (আ.) প্রিয় পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে বহু শোকতাপ সম্বরণ করার পর ফিরে পেয়েছিলেন। এই দিনই মহান আল্লাহপাক হযরত ইউনুস (আ.)-কে মাছের পেট হতে উদ্ধার করেছেন।

Manual4 Ad Code

এই দিনই হযরত ঈসা (আ.) পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এই দিনেই তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। হযরত জিব্রাইল (আ.) এই দিনে আল্লাহপাকের রহমত নিয়ে হযরত আদম (আ.)-এর নিকট প্রথম উপস্থিত হয়েছিলেন। এই দিনই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, শাবাবে আহলে জান্নাত, সাইয়্যেদ হযরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তাঁর সঙ্গী-সহচরগণ করবালা ময়দানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শাহাদত বরণ করেছেন। এই দিনই আল্লাহপাক পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ও আসমান হতে বৃষ্টি নাজিল হয়েছে। আর এই দিনেই কোনো এক শুক্রবারে ইস্রাফিলের সিঙ্গার ফুৎকারে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।

যে ব্যক্তি এই দিন রোজা রাখবে সে যেন সারা বছর রোজা রাখল এবং অসীম পুণ্যের অধিকারী হলো। যদি কেউ এই দিন বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান করে মহান আল্লাহ পাক তাকে বিপদ হতে মুক্তি দান করবেন। আর যদি কেউ রোগীর সেবা করে, অসহায় এতিমদের মাথায় স্নেহভরে হাত বুলায়, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করে, পিতা-মাতাকে পানি পান করায় তবে তার আমলনামায় অশেষ পুণ্য লেখা হবে। পবিত্র আশুরার দিনে ফেরাউনের স্ত্রী বিবি আছিয়া শিশু মুসাকে গ্রহণ করেছিলেন। আবার স্বীয় কওমের লোকজনসহ হযরত মুসা (আ.) নীল নদ অতিক্রম করে ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি লাভ করেন। পবিত্র আশুরা সমগ্র জগৎ সৃষ্টির দিন হিসেবে যেমন স্বীকৃত, তেমনি এই দিন কেয়ামত অনুষ্ঠিত হয়ে জগৎ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code