প্রচ্ছদ

করোনাকালে বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো এবং রাষ্ট্রের দায়

  |  ১৭:৫৩, এপ্রিল ২৪, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual1 Ad Code

সাইফুর রহমান কায়েস

Manual2 Ad Code

একদা বাঙালিদের ঘরকুনো বলে বদনাম ছিলো। করোনাকালে বাঙালি সে বদনাম ঘুচাতে সক্ষম হয়েছে। তাই সরকারকে লকডাউন ঘোষণা করতে হয়েছে। বাঙালি একবার যখন বেরিয়েছে ঘর ছেড়ে তখন তাদের ঘরে রাখতে লাঠিপেটা করতে হচ্ছে। একটা ভিডিওক্লিপ দেখলাম বৃটেনের টাওয়ার হ্যামলেটসের পানের দোকানে ভিড়ের মধ্যে মল্লযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন দুই বাঙালি শারীরিক নৈকট্যে এসে। যেখানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য সেখানে বাঙালি মিসইন্টারপ্রিটেড হয়েছে। পুবের পথে না হেটে পশ্চিমের পথে হাটছে। আর করোনাকে সামাজিকভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে, জনজীবনকে আতংকের মুখে ফেলে দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় একজন ওয়াজি মারা যাওয়ায় তার জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছিলো পুলিশ এবং প্রশাসনের চোখে আঙ্গুল দিয়ে। যার জেরে ওসি এবং এএসপি সার্কেল প্রত্যাহৃত হয়েছেন। কিন্তু এর মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি, ডিসিকে দায়মুক্তি দেয়া হলো বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু এটা কেনো করা হলো? ডিসি এবং জনপ্রতিনিধিগণ তো বিষয়টি আগেই জানতেন। মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনছারী ওয়াজি হিসাবে তার নিজ জেলা এবং জেলার বাইরে সুপরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে যে শোকাভিভূত জনতার ঢল নামবে এটাই স্বাভাবিক। তাই তাদের কাছে বিষয়টি খুব সহজেই অনুমিত ছিলো। তারা নিজেদের অনুমানযোগ্য ধারণাকে কাজে লাগিয়ে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এর পরিণতি এখন কয়েকটি জেলার মানুষকে ভোগ করতে হবে।
করোনা সংকটকে এই জমায়েত আরো ঘনীভূত করতে প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবে। ফলে এই জমায়েতের আয়োজকগণও এর দায় এড়াতে পারেন না। সামাজিক সংক্রমণকে ত্বরান্বিত করে যেকোনো ধরনের গণজমায়েত, সামাজিক মানুষের অবাধ চলাচল। যেহেতু মানুষ হচ্ছে এই রোগের মূল বাহক। রাষ্ট্র এখন সেকারণেই সোশ্যাল লকডাউনের দিকে ঝুকেছে। কিন্তু কোথায় যেনো “বজ্র আঁটুনি, ফসকা গিরো ” ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। কেউই মানছেন না কারো কথা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মান্যবর সাংসদ উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী রাষ্ট্রের এই ভাবকে নিরুপায় বলে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু আমি বলবো রাষ্ট্র এক্ষেত্রে শুধু যে নিরুপায় ছিলো তাই কিন্তু নয়, নির্বিকারও ছিলো। ফলে রাষ্ট্র নিজেই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেছে। রাষ্ট্র যদি নিরুপায়ত্ব এবং নির্বিকারত্ব দেখায় তাহলে দেশের জনগণ সেই রাষ্ট্রব্যবস্থার কাছে আরো বেশী আশ্রয়হীন, অনিরাপদ প্রপঞ্চে পরিণত হতে বাধ্য। কাজেই চাই দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবপূর্ণ সময়ে রাষ্ট্র তার নাগরিকদেরকে নিয়মানুগ এবং শৃঙ্খলাবর্তী করতে আচরণে নমনীয়তা দেখালেও আইনের কঠোর প্রয়োগ আশাপ্রদভাবে নিশ্চিত করবে।

Manual3 Ad Code

লেখক: সাইফুর রহমান কায়েস
কবি,গল্পকার,প্রাবন্ধিক।

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code