কুৎসিত রূপ
রাজলক্ষ্মী মৌসুমী
ঘরে বসে কী আর করবো বলুন? এখন তো আমরা অসামাজিক জীব। কেই কাউকে দেখতে পাইনা। আসলেও দরজা খুলবো না আমিও যাবোনা কারো বাড়ীতে। কিন্তু লিখতে তো অসুবিধা নেই। এই সমস্যা গুলোর কথা সবাই কম বেশী জানেন তবুও বললাম।
আমাদের মানুষের   জন্ম  নাকি  সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ  জন্ম।
আসলে কথাটা কিন্তু  মিথ্যা নয়।
কত বিচিত্র  রূপ নিয়ে  কত বিচিত্র  ঘটনায়  আমরা রূপ ধারণ  করে থাকি। ইতিহাসের পাতায় হয়তো লিখা থাকবেনা যুগ যুগ মানুষের মুখে মুখে আর অন্তরের ফ্রেমে বাঁধা থাকবে।
আমরা বাড়ীর ফটকে লিখে রাখি”” কুকুর হতে সাবধান।
“অমানুষ হতে সাবধান” এই কথাটা কারো দরজায় লিখে   রাখিনা আমরা।
মানুষের বিচিত্র  কুৎসিত রূপটা  চেহারা দেখলে বুঝা যায় না।
“চোরে চোরে মাশতুতো ভাই ”
প্রাসঙ্গিক  কথায় গুরুজনরা বলতেন।
**ব্যাকরণবিদরাও বাগধারায় বাক্যটি প্রয়োগ করেছেন। বিদ্যালয়ে  ছেলেবেলায় জেনেছি চোরে চোরে মাশতুতো ভাই।
এই মানুষেরই আরেকটি  নাম চোর। তা কিন্তু বুঝিনি আগে।এই মানুষেরই কত রূপ।
করোনা ভাইরাস একদিন করুণা করবে অবশ্যই ।
অদৃশ্য ইতর ভাইরাস  যাবেই একদিন নরকে,
কিন্তু  এই অমানুষের  ছোবল থেকে বাঁচবো কি করে? এর ছোবল থাকবে অনাদিকাল।
এর উত্তর  কী আছে? আমাদের মতো মায়েদের কোলেই এদের জন্ম।
++করোনা ভাইরাস  আক্রমণের ভীতিতে রাতের ঘুমকে আমরা ভুলে গেছি-। অসহনীয়  কষ্টে দিন পাড় করছি সবাই।
যে করোনাকে আমরা ভয় পাই তার কবল থেকে বাঁচার জন্য যে মানুষ  রক্ষক তিনি রক্ষা করার সেবা দিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। প্রাণ বিসর্জন দিতেও তাঁদের ভয় নেই। তার মধ্যেও কেউ দায়িত্ব কর্তব্য পালন করছেন কেউবা মৃত্যুর ভয়ে এড়িয়ে যাচ্ছেন।আমার কেউবা দায়িত্ব পালনের মাঝেই নিজেই আক্রান্ত  হয়ে নীরবে প্রাণ বিসর্জন  দিলেন। পরিবারের সাথে দেখাও হলোনা।
এ মৃত্যু  এমনি  এক মৃত্যু তার ঠাঁই কোথায় হবে কেউ জানেনা। লাশের প”রে লাশ কে বা কার খোঁজ রাখে। হয়তো তাদের জন্মও এক সাথে হয়েছিলো।  তাঁদের আত্মার  জায়গা স্বর্গ বা বেহেশতে যে যাই বলি, যথাযোগ্য স্থানে যেনো হয় তা কামনা করি।
মানুষ  ভাবে এক হয় আরেক। মৃত্যুভয়ে মানুষ দূর্বল চিত্তে দিনাতিপাত  করছে আর এদিকে সুযোগ সন্ধানী
অমানুষ  অমানবিক নিষ্ঠুরতার জাল বুনে যাচ্ছে।
++ছদ্মবেশী  রক্ষক  মানুষরূপী  করোনা ভাইরাসের  মতো মানুষের সর্বনাশ করে চলেছে প্রতিনিয়ত।
আবার কারো কারো ভাদ্রমাসও হচ্ছে।
++ সর্বনাশ হচ্ছে  এমনি ভাবে —- কলিং বেল টিপে বাড়ীতে আসে করোনা রোগী  নেয়ার জন্য। রোগী নেয়ার ছলে  ডাকাতি  করে চলে যায়। কেই জানলোও না বুঝলোও না।ব্যাকরণ বইয়ে কিন্তু  ডাকাতে ডাকাতে মাশতুতো  ভাই বাগধারায় লেখা নেই  কিন্তু এখন যারা ব্যাকরণ  বই লিখবেন এই বাক্যটি লিখতে ভুল কোরবেন না   Please.
++ এমনও জানা গেছে ডাকাতি না করে মিথ্যার ছলে রোগী নিয়ে যায়।
বাড়ী থেকে যিনি বের হলেন, তিনি যদি অবিবাহিতা হয়ে থাকেন তাহলে তো কথাই নেই।
বের হলেন তে হলেনই।  একেবারে সমাজেও যাতে তার জায়গা না হয় সেই ব্যবস্থাই তারা করে দিয়ে যায়। পরিবারের লোক জন না পারবে ফেলতে না পারবে সমাজের মুখ বন্ধ করতে। ।কিন্তু তার কী অপরাধ? লকডাউনের নীরবতায় অমানুষরা অমানুষিক কাজ করে যাচ্ছে,।
যার গেলো তার সবই গেলো। এমনও শুনা গেছে
করোনার সাথে সাথে  রোগীটির  সতীত্বও নষ্ট হলো  মৃত্যুকেও  বরণ করে নিল। যে মরলো সে তো বাঁচলো।  সমাজের কুৎসা থেকে তার পরিবারও  রেহাই পেলো।   এই মানুষরূপী  কুকুর হইতে সাবধান * এই কথাটা কেনো আমরা লিখতে পারি  না।?
* করোনার   লকডাউনে অনেক  সুবিধাভোগী   ও  রাঘব বোয়ালরাও আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে ।
অসহায় দূর্বল মানুষের আহার  চুষে খাচ্ছে। 
মা কথাটায়  কত মাধুর্যতা কত পবিত্রতা।
মা যখন সন্তান জন্ম দেন  তখন কী মা জানতেন  তার সন্তান চোর,কুখ্যাত ডাকাত,  লম্পট  হবে?
যদি জানতেন  তাহলে হয়তো আঁতুড়  ঘরেই গলা টিপে মেরে ফেলতেন।।
কোন মা-ই চান না  তার সন্তানকে সমাজের মানুষ ঘৃণা করুক। সমাজের রক্তচোষা কীট বলুক,  কোন মা-ই চায়না।
মাটিকে ক্ষত বিক্ষত  করলে  মাটি  বোবা হয়ে থাকে। যেভাবে  মাটির ঢেলাকে  আকৃতি দেয়া যায় ঠিক তেমনি আকার ধারণ করে। বোবা ও  নির্বাক  থাকাটাই মাটি ও মায়ের বৈশিষ্ট্য। এই কু-কাজে যারা লিপ্ত তারা তো কোন না কোন মায়েরই সন্তান। সেই মায়েদের মনে
কী কষ্ট,  কী দুঃখ , এই নরপিশাচরা   জানেও না। লোভ লালসা নিয়েই  মত্ত,বোধশক্তিহীন  পশু।
+যারা সত্যিকারের মানুষ  তারা এই সমাজে স্তব্ধ হতবাক। তাঁদের অমূল্য কথা ওরা শুনতে চায় না।।
আর  যারা অমানুষ তারা  অস্থির  গৃহবন্দী  নয়।
অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ায়   অভিশপ্ত  ছোবলের  আশায়, নরকের বিষাক্ত কীট বহন করে চলে।।
মাটির কোলেও ওদের ঠাঁই  নেই।।নরকেও ওদের জায়গা নেই।
নরাধম পশুর  সংস্পর্শ থেকে নিজেকে রক্ষা করার দায়িত্বটুকু নিজেকেই নিতে হবে,  সচেতন হতে হবে।
বাড়ীর দরজা জেনে বুঝে খুলুন।
ঘরে থাকুন,  অন্যকেও বুঝান।

										