প্রচ্ছদ

সেই ইদ এই ইদ !

  |  ১০:৫৭, মে ০৩, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual4 Ad Code

তালুকদার তুহিন

প্রতিবছর ইদ আসে ইদ যায়,সবাই তার আত্মার টানে ছুটে যায় গ্রামে অথবা পরিবার পরিজনের কাছে।কেউ কেউ আবার বিদেশ বসে বাবামার জন্য কাঁদে,কাছে যেতে না পারায়।ছোট বেলার আমাদের ইদ হতো অন্য রকম,বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী তাই রোজার শেষ দিন অর্থাৎ চাঁন রাত(ইদের আগের রাত)আমরা পোশাক কিনতে যেতাম।তাঁর অপেক্ষায় এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করতো। ইদের দিনটা মূলত কাটতো সালামি পাওয়ার আশায় আর শেমাই,নুডুলস এগুলো খেয়েই।বিটিভিতে তখন জনপ্রিয় ছিল ‘ইত্যাদি’নামের অনুষ্ঠান,সেটাও মানুষ প্রচন্ড আগ্রহ নিয়েই দেখতো।বয়সের সাথে সাথে ইদ বদলে যেতে শুরু করলো।এখন ভাগ্না- ভাগ্নি,ভাতিজারা সালাম করে সালামি পাওয়ার আশায়।রোজগার শুরু করার পর প্রতি ইদে বাবাকে একটা শার্ট কিনে দিতাম।বাবা মারা যাওয়ার আগের ইদে একসাথে রিকশা করে যাচ্ছিলাম শার্ট কিনে দিতে,তখন বাবার শুকিয়ে যাওয়া শরীর দেখে খারাপই লাগছিলো। চোখে পানি চলে আসছিলো, ঠিক একি ভাবে বাবাও আমাকে নিয়ে যেতেন ছোট বেলায়।

Manual1 Ad Code

ইদে সিলেটে বিভিন্ন মার্কেটগুলো প্রায়শই জমজমাট থাকে,কখনো কখনো বাজার করতে অথবা কখনো কখনো পরে কি কিনবো,সেটা দেখতেই মার্কেটে যেতাম।দেখা হয়ে যেত বন্ধুদের সাথেও।আসলে তখন ইদের আসল আনন্দ ছিল শেষ দিকের কয়েকটি রোজা,বিশেষ করে ইফতারের পরেই মানুষের সমাগম।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গত কয়েক বছরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।তবে আগে মানুষ মোবাইলে টেক্সট মেসেজ পাঠাতো ইদ শুভেচ্ছা হিসেবে।
এখনকার ইদ অবশ্য পুরোই যান্ত্রিক,ফেইসবুকে চলে শুভেচ্ছা জানানো,কেমন যেন সবকিছুর মধ্যে মেকি মেকি ভাব।আপনার দেওয়া কোন ফেইসবুক স্টাটাসে পড়বে ‘ইদ মোবারক’লিখে কমেন্ট।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে এবারের ইদ সবচেয়ে ব্যাতিক্রম।করোনা ভাইরাসের কারণে সবকিছুই এখন লক ডাউন করা।তাই মার্কেটগুলোও বন্ধ।ইদের আগে এগুলো খোলার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে।তাই হয়তো ইদ ইদ আমেজটা থাকবে না।দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই ইদ আসে,তবে এবারের রোজায় ছিলো না মসজিদে তারাবীর নামাজ পড়ার সুযোগ। ব্যবসায়ীরা বিকল্প হিসেবে ফেইসবুকে তাদের পণ্য উপস্থাপন করছেন,এবং অনেকে সেখান থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় কাপড় অথবা কসমেটিক ক্রয় করছেন,যদিও এই ইন্টারনেট ভিত্তিক ক্রয় বিক্রয় এখনো মানুষের পুরোপুরি আস্থা অর্জন করেনি।

Manual2 Ad Code

হয়তো আগের ইদে অনেকে হারিয়েছেন বাবামাকে,তাই এই ইদটা তার কাছে অনেক বেদনার,আবার করোনার কারনে অনেকেই দেশে আসতে পারবেন না,বাবামার সাথে ইদ কাটাতে পারবেন না,এটা অনেক কষ্টের হবে।দেশের ভিতরে ও অনেকে, এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যেতে পারছেন না লক ডাউনের কারণে, সবকিছু মিলিয়ে বলাই চলে নিরানন্দ ইদ হয়তো এবারে পালন করতে হবে, তারপরও আশার আলো নিয়ে আসবে এই ইদ,এই বার্তা নিয়ে হয়তো খুব শীর্ঘই আসবে ভেক্সিন এই করোনা রোগের।সবার ইদ আনন্দ নিয়েই কাটুক।

Manual6 Ad Code

লেখক:
কলামিস্ট, প্রভাষক(ইংরেজি) এবং সভাপতি, সাকসেস হিউম্যান রাইট সোসাইটি,সিলেট জেলা।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code