প্রচ্ছদ

লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নিজস্ব প্রোপার্টি ক্রয়

  |  ২০:১৭, জুন ১৭, ২০২১
www.adarshabarta.com

আদর্শবার্তা ডেস্ক :
প্রায় ২শ হাজার পাউণ্ডের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাব। কোনো মর্গেজ বা ঋণ ছাড়াই নগদ অর্থ দিয়ে এ সম্পত্তি ক্রয় করা হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাজ্যে বাংলা গণমাধ্যমকর্মীদের বহু বছরের একটি লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো।
জানা গেছে, লণ্ডনের বার্কিং এলাকায় স্টেশনের অদূরে অবস্থিত নিচ তলার এই ফ্ল্যাটের সামনের গার্ডেন, পেছনে কমিউনাল গার্ডেন এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রয়েছে। এর ক্রয়মূল্য ১৮৫ হাজার পাউণ্ড। স্ট্যাম্প ডিউটি এবং কিছু সংস্কারসহ মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ২শ হাজার পাউণ্ড। নগদ অর্থে ক্রয়ের ফলে ক্লাবের অন্তত ১০ হাজার পাউণ্ড সাশ্রয় হয়েছে বলা চলে।
এ সুখবরে তিন শতাধিক সদস্যের ক্লাবের সকলেই উচ্ছাস প্রকাশ করে ক্লাবের নির্বাহী কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে সংগঠনের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা যেমন সফল হলো তেমনি ক্লাবের আর্থিক দিকটি আরো সংহত হলো।
লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলমান কোভিড মহামারীতে নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গত ছয় মাস ধরে ক্লাবের নিরলস তৎপরতায় এ ক্রয় সম্পন্ন হয়েছে। ক্লাবের নির্বাহী কমিটি এজন্য প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়ের ও ট্রেজারার আ স ম মাসুমকে এ ক্রয়ের পুরো দায়িত্ব দেয়। প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন প্রোপার্টি দেখা ও পর্যবেক্ষণের পর বার্কিংয়ের ফ্ল্যাটটি ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়।
এতে বলা হয়, এই উদ্যোগের পুরো প্রক্রিয়াটিই এগিয়েছে ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যের সার্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা নিয়ে। সফলভাবে এই উদ্যোগ সম্পন্ন করায় নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য সন্তোষ প্রকাশ করে ক্লাব নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্লাবের সকল সদস্যকে নিয়ে অথবা অন্তত ক্লাবের সাবেক শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শীঘ্রই এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আয়োজন করা হবে বলে ক্লাব নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন। পরবর্তীতে লাইফ মেম্বার ও দাতাদের সম্মানে আলাদা একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও ক্লাবের রয়েছে।
ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়ের এবং ট্রেজারার আ স ম মাসুম যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করতে চাই, ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারিদের নেতৃত্বে এই প্রোপার্টির জন্য বিভিন্ন সময় তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে। সর্বশেষ, বর্তমান কমিটির সময় আরো প্রায় ৩০ হাজার পাউণ্ড তহবিল সংগৃহীত হয়। এক্ষেত্রে লাইফ মেম্বার ছাড়াও প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগতভাবে একাধিক কর্পোরেট মেম্বার হয়েছেন। যার ফি ৫ হাজার পাউণ্ড। আমরা এই শুভক্ষণে ক্লাবের সাবেক নেতৃবৃন্দ এবং সম্মানিত দাতা সদস্য প্রত্যেকের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, যেহেতু বাংলা পাড়া ব্রিক লেইন ও এর আশেপাশে প্রোপার্টির মূল্য আমাদের সামর্থ্যরে অনেক বাইরে। ফলে ক্লাবের সঞ্চিত তহবিল দিয়ে এই এলাকায় সংগঠনের জন্য উপযুক্ত প্রোপার্টি কেনা প্রায় অসম্ভব বিবেচনায় বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয় অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে গত দুই টার্ম থেকে নেতৃবৃন্দ ব্রিক লেইনের ভাড়া করা ক্লাবের নিজস্ব অফিস পরিচালনা আরো সুনিশ্চিত করতে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে লণ্ডনের অন্য কোথাও একটি প্রোপার্টি কেনা এবং আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত কমিটি সেইভিংস একাউন্ট থেকে অর্থ ক্লাবের কারেন্ট একাউন্টে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয় এবং পরবর্তীতে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কিন্তু এর ফলে আবার বছরে ফিক্সড ডিপোজিট থেকে যে প্রায় ৩ হাজার পাউণ্ড আয় হতো সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এ কারণে প্রোপার্টি কেনার ব্যাপারে বর্তমান কমিটি আরো বেশী তাগাদা অনুভব করে এবং সক্রিয় হয়।
নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করে বলেন, এতোদিন ধরে ব্যাংকে রাখা দেড়শ -দু’শ হাজার পাউণ্ডের সঞ্চয় থেকে বছরে যে সামান্য আয় হতো তার বদলে এই প্রোপার্টির ভাড়া বাবদ বছরে ক্লাবের আয় হবে ১২ থেকে ১৫ হাজার পাউণ্ড। পাশাপাশি ঘরের দামও বাড়বে যা ক্লাবেরই সম্পদ সমৃদ্ধ করবে। ইউরোপের অন্যতম উন্নয়ন কার্যক্রম চলা এই এলাকায় প্রতি বছরই ঘরের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া সম্মানিত দাতা সদস্যদের আর্থিক ডোনেশন এতো বছর থেকে আমানত হিসেবে রক্ষার পর এবার তা কাজে লাগলো এবং ক্লাবের সম্পদ আরো সংহত ও নিরাপদ হলো।
ভবিষ্যতে সংগঠনের নতুন নতুন পরিকল্পনা ও সুন্দর সুন্দর আয়োজনে ক্লাবের এই নিয়মিত আয় অনেকটা সহায়ক হবে বলে বর্তমান কমিটি আশা প্রকাশ করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমান প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও ট্রেজারার কনফারেন্স কলের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ক্লাবের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে প্রোপার্টি কেনার বিষয়টি অবহিত করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট যথাক্রমে মহিব চৌধুরী, মোহাম্মদ বেলাল আহমদ, নবাব উদ্দিন ও সৈয়দ নাহাস পাশা, সাবেক সেক্রেটারী যথাক্রমে নজরুল ইসলাম বাসন ও আবদুস সাত্তার, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট যথাক্রমে আমিরুল চৌধুরী ও মাহবুর রহমান এবং সাবেক ট্রেজারার মুসলেহ উদ্দিন সুসংবাদটি জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে বর্তমান কমিটিকে অভিনন্দন জানান। তারা বলেন, বহু বছরের স্বপ্ন ছিলো এটি। এর কার্যকর বাস্তবায়ন একটি দৃষ্টান্ত হয়ে রইবে। তারা বলেন, এটি পুরো ক্লাবের জন্য একটি ঐতিহাসিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
সূত্র : সাপ্তাহিক পত্রিকা