প্রচ্ছদ

৯০ লাখ ডলারের সৌর বিদ্যুৎ পাম্পের প্রজেক্ট পেল পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ

  |  ১৫:১৫, অক্টোবর ১৪, ২০২০
www.adarshabarta.com

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা বগুড়ায় ৭০৫টি সৌর বিদ্যুৎচালিত সেচ পাম্প বসানোর একটি প্রকল্প পেয়েছে বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ লিমিটেড। জার্মানির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রাচ সোলারের সঙ্গে যৌথভাবে ৯০ লাখ ডলারের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ লিমিটেড। খবর বাণিজ্য বিষয়ক সাময়িকী পিভি ম্যাগাজিনের।

এই প্রকল্পের অর্থায়ন করছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘সৌর বিদ্যুৎচালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় টার্ন-কি পদ্ধতিতে সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প স্থাপনের এই ক্রয় প্রস্তাব বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) অনুমোদন দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সরকার ১ কোটি ৩৪ লাখ ডিজেল চালিত সেচ পাম্প পুনপ্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করছে। প্রতি বছর এসব পাম্পের পেছনে প্রায় ১০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ জ্বালানি খরচ হয়। একইসঙ্গে ৩ লাখ ৬৫ হাজার বৈদ্যুতিক পাম্পের জায়গায় সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্প বসাতে চাইছে সরকার। এসব বৈদ্যুতিক পাম্পের গ্রীষ্মের সময় প্রায় ২ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে।

এমতাবস্থায় বৈদ্যুতিক পাম্পের জায়গায় সৌরচালিত পাম্প বসালে জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যোগ হবে। এজন্য সৌরচালিত সেচ পাম্প বসানোর জন্য সম্প্রতি দিক নির্দেশনা প্রকাশ করেছে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ১ হাজার ৯৫০টি সৌর পাম্প রয়েছে। তবে ২০২৫ সাল নাগাদ ৫০ হাজার সৌর পাম্প বসাতে চাইছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল)। এজন্য অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৬৩০টি পাম্প বসানোর জন্য গত বছর অনুমোদনও দেয় তারা।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন করবে বৈদেশিক দাতা সংস্থাগুলো। এই তালিকায় রয়েছে-বিশ্বব্যাংক, জার্মানির উন্নয়ন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান কেএফডব্লিউ, জাইকা, ইউএসএইড ও এডিবি রয়েছে।

স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন পিভি ম্যাগাজিনকে বলেছেন, বিদেশি দাতাদের উপর নির্ভরশীলতা সৌর সেচ ব্যবস্থার পরিকল্পনা ধীরগতি করেছে। তিনি বলেন, আমরা একটি ভালো ব্যবসার মডেল দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি যাতে সৌরচালিত সেচ পাম্পের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার নিশ্চিত করতে পারি।

বাংলাদেশ সৌর ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দীপাল সি বড়ুয়া বলেছেন, এ ধরনের অ্যাপ্লায়েন্স কেনার ক্ষেত্রে ইডকল ছাড়াও যদি ব্যাপকভাবে লো-কস্ট ঋণ দেয়া হয়, তাহলে এটা ত্বরান্বিত হবে।

তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে আরও প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। প্রায় সব ব্যাংকেরই গ্রিন ফাইনান্সিং উইন্ডো রয়েছে, যার মাধ্যমে সৌরচালিত সেচ পাম্পের উদ্যোক্তাদের সফট লোন সহজলভ্য করা যেতে পারে।

বড়ুয়া আরও বলেন, ক্ষুদ্র সোলার পাম্প উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ সহজলভ্য করলে আরও সহজে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে।

বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ৩ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করে পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ লিমিটেড। পরবর্তীতে দেশের বিদ্যমান জ্বালানি সংকট হ্রাসে কাজ করা এবং পুনর্নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ব্যবসা প্রসারিত করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া এবং শিল্প খাতের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে যাচ্ছে পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ। বৈপ্লবিক বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি সৌর শক্তি খাতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত এবং গ্রিন এনার্জির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে, ‘বেঙ্গল সোলার’ ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ লিমিটেড এককভাবে সৌরশক্তির ব্যবহার নিয়ে প্রচার করছে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন দ্বারা পরিবেশ দূষণ কমাতে সচেতনতা তৈরি করছে। ২০০০ সাল থেকে ‘গ্রিন এনার্জি মেড হেয়ার’ স্লোগান নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে পাওয়ার ইউটিলিটি বাংলাদেশ লিমিটেড।