শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন খালেদা জিয়া
আদর্শবার্তা ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়ার স্বামী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নিতে অজস্র মানুষের উপস্থিতিতে যেন জনস্রোত তৈরি হয়।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক খালেদা জিয়ার জানাজা পড়ান।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার আগে উপস্থিত মুসল্লিসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জানাজার আগে তারেক রহমান বলেন, আমার মা মরহুমা বেগম খালেদা জিয়া কারো থেকে কোনো ঋণ নিয়ে থাকলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি সেটি পরিশোধের ব্যবস্থা করব।
খালেদা জিয়ার জীবনে কখনো কোনো আচরণে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ জানান তারেক রহমান।
লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয়।
জানাজায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও নজরুল ইসলাম খান সহ দলের শীর্ষ নেতারা এবং লাখ লাখ নেতাকর্মী জানাজায় অংশ নেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নাহিদ ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি সাদিক কায়েম এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আশ পাশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে মানুষ অবস্থান নেয় জানাজায় অংশ নিতে। তিল ধারণের জায়গা নেই। ধারণা করা হচ্ছে, এটি কোনো মুসলিম নারীর বৃহৎ জানাজা ইতিহাসে। শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলিম বিশ্বের স্মরণকালের বড় জানাজা।
বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরাও জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে ভারত। বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বড় ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সারদার আয়াজ সাদিক।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকায় পৌঁছেছেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দা শর্মা। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বালা নন্দা শর্মাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (আন্তঃসরকারি ও কনস্যুলার বিষয়ক) এম ফরহাদ হোসেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রমকে ঘিরে মঙ্গলবার রাত থেকেই কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার সকালেও রাজধানীর সংসদ ভবন ও জিয়া উদ্যানে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার দাফনের মধ্য দিয়ে এক বর্ণাঢ্য ও ঘটনাবহুল রাজনৈতিক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
(সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব)

