প্রচ্ছদ

কূটনৈতিক বিজয় শেখ হাসিনার আরেকটি

  |  ০৯:৫৫, জুলাই ২০, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual7 Ad Code

মোঃ নাসির, বিশেষ প্রতিনিধি :

Manual8 Ad Code

করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এখন গোটা বিশ্বে চলছে এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতা। কোন দেশ আগে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করবে, সেই প্রতিযোগিতা তো আছেই, পাশাপাশি কে সবার আগে ভ্যাকসিন পাবে সেটা নিয়েও চলছে দৌড়ঝাঁপ। আর এখানেই বাংলাদেশকে বড় এক জয় এনে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের সিনোভ্যাক লিমিটেডের করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ফেজের ট্রায়াল হবে বাংলাদেশে। এই ট্রায়ালের ক্ষেত্র হতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছিল বহু দেশ। কারণ যেই দেশে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালানো হয়, ভ্যাকসিনটি সফল হলে সেই দেশটিকেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়। এজন্য বিশ্বের শতাধিক দেশ এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু সবাইকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশই হয়ে উঠলো এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের ক্ষেত্র।

Manual1 Ad Code

সরকারের দায়িত্বশীল কয়েকটি সূত্র বলছে, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই বাংলাদেশ করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে যে দেশগুলো গবেষণা চালাচ্ছে, সেই দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছিলেন এবং নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেটারই ফল পাওয়া যাচ্ছে এখন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের সমস্ত কিছুই এখন কূটনৈতিক কলাকৌশলের উপর নির্ভর করে। করোনার ভ্যাকসিনও এর ব্যাতিক্রম নয়। খুব কম দেশই ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছে। আর চড়ান্ত ধাপে আছে হাতে গোনা কয়েকটিমাত্র দেশ। এমন অবস্থায় বিশ্বের দু’চারটি বাদে বাকি প্রায় সব দেশই অন্যদেশ থেকে ভ্যাকসিন আনতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে বড় একটি সাফল্য পেল বাংলাদেশ।

Manual4 Ad Code

জানা গেছে, ইতিমধ্যে চীন উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চলছে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রস্তুতি। বড় আকারে তৃতীয় ধাপের ভ্যাকসিন পরীক্ষা চালাতে ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমোদন পেয়েছে চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ (সিএনবিজি)। আরব আমিরাতের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেসে হতে যাচ্ছে চীনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা। প্রাথমিকভাবে সরকারি ৭-৮টি কোভিড হাসপাতালে এ ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ার বাংলাদেশে খুব দ্রুতই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই দেখতে পাচ্ছি যে, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও যাচ্ছে অনেক মানুষ। অনেক দেশই করোনার সংক্রমণ এড়াতে মাসের পর মাস লকডাউন করে রেখেছিল। কিন্তু বাংলাদেশে সবকিছু বন্ধ রাখাটা অত্যন্ত কঠিন। এটা ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারতো। সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র হলো ভ্যাকসিন। আর সেটাই খুব দ্রুত পাওয়ার জন্য শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতা ছিল। চীন যে তাদের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাতে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে, এটা তারই প্রমাণ।

Manual1 Ad Code

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এশিয়ার রাজনীতি খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। চীন একটা বড় জোন তৈরির চেষ্টা করছে। আর দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। এ অঞ্চলের সরকারপ্রধানরা খুব বেশি একপেশে হয়ে যাচ্ছে। হয় তারা চীনের পক্ষে গিয়ে ভিড়ছে, নয়তো ভারতকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যারা কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে না। বরং দুপক্ষের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রেখে চলছে। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশের স্বার্থকে সবকিছুর উপরে স্থান দিচ্ছেন। সেভাবেই তিনি তার কূটনীতিকদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। চীনের করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালই এর বড় প্রমাণ। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চীনা ভ্যাকসিন পাওয়া সহজ বিষয় নয়। বাংলাদেশ ঠিক সেই কাজটিই করেছে। এটা নিঃসন্দেহে একটা বড় কূটনৈতিক সাফল্য।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code