প্রচ্ছদ

করোনাকে হারাতে প্রয়োজন কিছু বিস্ময়কর উদ্ভাবন

  |  ২১:৩২, এপ্রিল ২৪, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual4 Ad Code

মহামারী করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য, সম্পদ ও সমৃদ্ধির বিশাল ক্ষতি করেছে। এটি বিশ্বযুদ্ধের মতোই। আমরা প্রত্যেকেই একই সরলরেখায় রয়েছি। করোনাভাইরাস আধুনিক যুগের প্রথম মহামারী।

Manual3 Ad Code

এ রোগ সম্পর্কে জানতে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উপাদান উন্নয়নে প্রত্যেকে একত্রে কাজ করতে পারে। আমি মনে করি, ভাইরাসটির সংক্রমণ হ্রাসে বৈশ্বিক উদ্ভাবন প্রধান চাবিকাঠি। টেস্ট, চিকিৎসা, ভ্যাকসিন ও সংক্রমণ কমানোর নীতি এর অন্তর্ভুক্ত, যা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ক্ষতি কমাতে পারে।

ব্যাখ্যামূলক অগ্রগতি ও হ্রাস : মহামারীর প্রথম ধাপে আমরা বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের ব্যাখ্যামূলক চিত্র দেখেছিলাম, চীন থেকে শুরু হয়ে এশিয়াজুড়ে, এরপর ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে। প্রতি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বহুবার দ্বিগুণ হয়েছিল। যদি মানুষের স্বভাব পরিবর্তন না হতো, তাহলে অধিকাংশ মানুষ সংক্রমিত হতো। স্বভাব পরিবর্তনের মাধ্যমে বহু দেশ তাদের সংক্রমণের হার নিম্নস্তরে রেখেছে এবং কমাতে শুরু করেছে।

স্বভাব পরিবর্তনের বড় উপকারিতা হলো নাটকীয়ভাবে সংক্রমণের হার কমানো, এর কারণে প্রতি আট দিনে দ্বিগুণ হওয়ার পরিবর্তে প্রতি আট দিনে সংক্রমণ নিম্নগামী হয়েছে। প্রথমে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কতজন নতুনভাবে সংক্রমিত হয়েছেন এটি শনাক্ত করতে আমরা ‘পুনরুৎপাদন হার’ ব্যবহার করি।

এটি খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। বহু মানুষ উপলব্ধি করবে যে, বহু স্থানে আমরা এপ্রিলে হাসপাতালে প্রচুর সমাগম ও জুলাইয়ে শয্যা খালি হতে দেখব। এটাই সংক্রমণ হ্রাসের ব্যাখ্যামূলক বৈশিষ্ট্য। গ্রীষ্মকালে, কিছু স্থানে যেখানে অভ্যাসগত পরিবর্তন মেনে চলা হয়েছে সেখানে ব্যাখ্যামূলক সংক্রমণ হ্রাস হয়েছে। আমরা কি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি? স্বভাবগত পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল কিনা এটা জিজ্ঞাসা করা মানুষের জন্য যৌক্তিক।

জবাব হলো হ্যাঁ। এ পরিবর্তন আমাদের লাখ লাখ মৃত্যু এবং হাসপাতালের ভিড় এড়াতে সাহায্য করেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি পরিশোধ করে সংক্রমণ হার কমানো গেছে নজিরবিহীনভাবে। যে কোনো কিছুর চেয়ে কর্মসংস্থান হ্রাস খুবই দ্রুত হয়েছে, যা এর আগে কখনও হয়নি। অর্থনীতির পুরো খাতগুলো বন্ধ।
এটা উপলব্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ যে, সরকারের কড়াকড়ি নীতির কারণেই এমনটা হয়নি। যখন মানুষ বিস্তৃতভাবে এ রোগ ছড়াচ্ছে বলে শুনেছে, তখন তারা স্বভাব পরিবর্তন করে ফেলেছে। ২০১৯ সালের অর্থনীতিকে ২০২০ সালে আরও শক্তিশালী করার কোনো সুযোগ সেখানে ছিল না।

Manual3 Ad Code

প্রত্যেক মানুষ নিজে আক্রান্ত হওয়া বা তাদের পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তিদের সংক্রমিত করা এড়াতে কাজে না যাওয়া, রেস্টুরেন্টে খাওয়া বা ভ্রমণে না যাওয়াকে পছন্দ করেছে। সংক্রমণ হার নিম্নস্তরে রাখতে যথেষ্ট মানুষ তাদের অভ্যাস পরিবর্তনে অভ্যস্ত হয়েছে, সরকার এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পরই কিছু কর্মকাণ্ড খুলে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা মনে করছে।

ধনী দেশগুলো সংক্রমণ হার কমানো নিরীক্ষণ করেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফেলার চিন্তাভাবনা করছে। এমনকি সরকার কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করছে, এখনই প্রত্যেককে কাজে ফেরার অনুমতি দেবেন না। কিছু মানুষ দ্রুতই কড়াকড়িতে শিথিলতা চান এবং বিধিনিষেধ ভাঙতে পছন্দ করবেন, যেটি সবাইকে ঝুঁকিতে ফেলবে। নেতাদের উচিত আদেশ পালনে উৎসাহিত করা।

শত্রুকে হারাতে প্রয়োজন উদ্ভাবন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাডার, টর্পেডো এবং কোড-ব্রেকিংয়ের মতো কিছু বিস্ময়কর উদ্ভাবন যুদ্ধ দ্রুত সমাপ্তিতে সাহায্য করেছিল। মহামারীর ক্ষেত্রেও এটি হবে। এ উদ্ভাবনকে আমি পাঁচ প্রকারে বিভক্ত করেছি : চিকিৎসা, ভ্যাকসিন, টেস্টিং, কন্টাক্ট ট্রেসিং ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার বিধি।

এই ক্ষেত্রগুলোতে অগ্রগতি ছাড়া আমরা স্বাভাবিক ব্যবসায়ে ফিরতে বা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারব না। প্রতি সপ্তাহেই আপনারা নতুন নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে পড়ছেন যেগেুলো প্রয়োগও করা হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশই ব্যর্থ হচ্ছে। আমি আশাবাদী যে, কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি এ রোগের বোঝা কমাতে পারবে।

Manual7 Ad Code

এর মধ্যে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে ধনী দেশগুলোতে সরবরাহ করা সহজ হবে। আর কিছুর জন্য আরও সময় প্রয়োজন। গ্রীষ্মের মধ্যে বা বর্ষায় এগুলোর অধিকাংশই পাওয়া যেতে পারে। সুস্থ হওয়া রোগীর প্লাজমা ব্যবহারও আরেক কার্যকরী চিকিৎসা হতে পারে। আক্রান্ত মানুষ থেকে সংক্রমিত ব্যক্তিদের খুঁজতে মোবাইল ডিটেক্টর, জিপিএস ট্রাকিংয়ের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার বেশ ফলপ্রসূ।

Manual5 Ad Code

লেখক : বিল গেটস, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা

তার নিজস্ব ব্লগ গেটস নোটসে প্রকাশিত নিবন্ধ

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code