প্রচ্ছদ

চাকুরী দেয়ার নামে এক অভিনব প্রতারণার গল্প!

  |  ০৪:১৫, মে ০৩, ২০২১
www.adarshabarta.com

Manual4 Ad Code

আপনাকে না দেখে একটা দিন কাজ শুরু করার পূর্বেই মালিক আপনার জুতা ও কাজের ড্রেস কেনার জন্য ১৯৮০ ইউরো চেক পাঠিয়ে দিয়েছেন, এমন মালিক ভালো মালিক কয়জনের ভাগ্যে মিলে বলেন?

দীর্ঘ দিন কাজ খুঁজতেছেন ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশী রহিম মিয়া (ছদ্ধনাম) অনলাইন জব পোর্টাল এর একটি লোভনীয় জব অফার দেখে সিভি পাঠিয়েছিলেন। সিভি পাঠানোর পর মালিক পক্ষ কাজের চুক্তিনামা তৈরী করার কথা বলে দরকারি আরো কিছু কাগজপত্র চেয়ে নেন। এর পর চুক্তি নামা তৈরী করে পাঠিয়ে দেন। কাজ করার জন্য জুতা ও কাজের ড্রেস কেনার জন্য অগ্রিম টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। কাজের চুক্তি ও মালিকের পাঠানো অগ্রিম অর্থ পেয়ে রহিম মিয়া তো মহাখুশী, ভাবতেছেন এতদিন পর একজন ফেরেস্তার মতো মালিক পেয়ে গেলাম।

১৯৮০ ইউরো চেক একাউন্টে জমা দিলেন ২ দিনের মধ্যে টাকা ক্যাশ হয়ে গেল, রহিম মিয়া খুবই এক্সসাইটেড। কাজ নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করলেন। চুক্তিতে থাকা কাজের ঠিকানায় গিয়ে বাহির থেকে কাজের জায়গা দেখে আসলেন। ভিতরে ঢুকলেন না।

এর পর একদিন মালিক পক্ষ থেকে ফোন পেলেন যে , রহিম মিয়া আমরা ভুলে কিছু টাকা আপনাকে বেশি পাঠিয়ে দিয়েছি এখন আপনি ৩০০ ইউরো জুতা ও ড্রেসের জন্য রেখে বাকি টাকাটা আমাদের কে ফেরত পাঠিয়ে দেন। রহিম সাহেব সৎ মানুষ, এক কথায় রাজি হয়ে বললেন, জি স্যার, কিভাবে পাঠাবো বলেন? তুমি যেকোনো তাবাক এ গিয়ে Transcash করে পাঠিয়ে দাও, মালিকের কথা মতো তিনি তাবাক এ গিয়ে Transcash এর মাধ্যমে ২৫০ ইউরো করে ২টি মোট ৫০০ ইউরো Transcash কিনে তাদেরকে পিন নম্বর পাঠিয়ে দেন। এর তারা আবারও পাঠাতে বললে তিনি আবারো তাবাক এ গেলে তাবাক দোকানদার মহিলা বিষয়টি লক্ষ করেন বলেন তুমি এতো Transcash কেন কিনতেছো? রহিম মিয়ার সোজা-সাপ্টা উত্তর আমার মালিকের জন্য, তাবাক দোকানদার পাল্টা জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি তোমার মালিক কে চেন ? উত্তর না, তুমি কেন তোমার মালিকের জন্য Transcash কিনবে? রহিম মিয়ার জবাব তিনি আমার জন্য অগ্রিম টাকা পাঠিয়েছেন।

তিনি রহিম মিয়াকে বললেন, তুমি এটি কেনা বন্ধ করো. ঠিক ঐ অবস্থায় মালিকের ফোন তাড়াতাড়ি টাকা পাঠাও , তাবাক দোকানদার পরিস্থিতি বুঝতে পেরে রহিম মিয়ার থেকে ফোন নিয়ে তিনি নিজে মালিকের সাথে কথা বলেন। গল্পের মালিককে বললেন, তুমি যা করতেছো এটি ঠিক না, এটি অন্যায়। এটি অপরাধ। তাবাক দোকানদার ধরে ফেলেছেন এটি অপরাধী চক্রের কাজ, তাই তিনি তাকে কড়া ধমক মারেন এবং রহিম মিয়াকে অতি দ্রুত পুলিশ কমপ্লেইন করতে থানায় পাঠান। রহিম মিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। কারণ এটি তার জন্য খুবই গুরত্বপূর্ন কেননা তার কার্ড দূ সিজুর, কার্ড ভিতাল, ব্যাংকের রিব , দমিছিল সব কিছু অপরাধ চক্রের কাছে। এগুলি দিয়ে তারা যদি কোনো ক্রাইম করে রহিম মিয়ার জীবন শেষ!

Manual6 Ad Code

রহিম মিয়া থানায় পুলিশের সামনে বসা থাকা অবস্থায় ও অপরাধী চক্র টাকা দেয়ার জন্য কল দেন কিন্তু পুলিশের মধ্যে কোনো সিরিয়সনেস ছিল না। কিন্তু রহিম সাহেবের অবস্থা খুবই খারাপ বারবার ফোন, একক বার একক নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে তাকে মানসিক যন্ত্রনা দিচ্ছে। সে নিজেকে নিরাপদ বোধ করছেন না। তার ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিন যাচ্ছে, এক রকম অতিষ্ঠ হয়ে উঠে আজ বিকেলে আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি আমার সাথে শেয়ার করেন। এই ঘটনা সব কাগজ পত্রও তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।

তিনি অনুরোধ করেছেন বিষয়টি যেন আমি পুরা কমিউনিটিতে শেয়ার করি. আমাদের মানুষগুলি যেন সচেতন হন। আর কোনো বাংলাদেশী যেন এই অপরাধী চক্রের পাতানো ফাঁদে না পড়েন।

*আপনাদের মধ্যে আর কেউ এই ধরণের পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন কিনা? কমেন্টস করে জানাতে পারেন।

প্রিয় ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই ও বোনেরা। আপনারা সবাই সচেতন থাকবেন।

* কোনো কাজের অফার আসলে বিশেষ করে অনলাইন সূত্রে হলে ভালো মতো যাচাই বাছাই করবেন।

* সাইন করার জন্য কোনো ডকুমেন্টস পাঠাইলে তা ভালো করে বুঝে নিবেন।

*আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন বিশেষ করে কার্ড দূ সিজুর, ব্যাঙ্ক রিব, সিকিউরিটি সোশ্যাল নাম্বার একান্ত বিস্বস্থ না হলে কখনো দিবেন না।

Manual3 Ad Code

*এই ধরণের ঘটনার শিকার হলে আপনার নিকটবর্তী থানায় গিয়ে অবশ্যই ডাইরি করে আসবেন।

Manual2 Ad Code

*সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে নিন্মে প্রদত্ত লিঙ্কে গিয়ে অনলাইন অভিযোগ করতে পারবেন

লিঙ্ক : https://www.cybermalveillance.gouv.fr/

*নিচে সচেতন হন, অন্যকে সচেতন করতে পোষ্ট শেয়ার করুন।

জনস্বার্থে – বি সি এফ

Manual4 Ad Code

(বিসিএফ এর টাইম লাইন থেকে)

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code