প্রচ্ছদ

মেডিক্যাল পণ্য তৈরিতে বিশ্বব্যাংক ১৫০ কোটি টাকা দেবে

  |  ২২:৪৫, এপ্রিল ১৮, ২০২১
www.adarshabarta.com

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

করোনা থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার অনুদান দেয়া হবে। ইসিফোরজে কর্মসূচীর আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোক্তারা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত সহায়তা পাবেন। করোনা মোকাবেলায় এ সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই), ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইক্যুইপমেন্ট, এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন ও কারিগরি মানের উন্নয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকান্ড গবেষণা, পণ্য উন্নয়ন, টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবনী কাজে এ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করে অনুদান সহায়তা নিতে পারবে।

উল্লেখ্য, মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবলে এখন বাংলাদেশ। প্রতিদিন মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। চাহিদা বেড়েছে সব ধরনের মেডিক্যাল পণ্যসামগ্রীর। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে দাম বেড়ে গেছে, মাস্ক, স্যানিটাইজার, গ্লাভস, চশমা, শিল্ড, সুরক্ষা পোশাক ও অন্যান্য মেডিক্যাল পণ্যসামগ্রীর। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের অনুদান পেলে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা কমমূল্যে এসব পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করতে সক্ষম হবে। রবিবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ উদ্যোক্তা বান্ধব তহবিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ওই অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়ালি) প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এতে জানানো হয় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) প্রকল্পের আওতায় মেডিক্যাল এ্যান্ড পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (এমপিপিই) পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ‘কোভিড-১৯ এন্টারপ্রাইজ রিসপন্স ফান্ড’-এর মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় ম্যাচিং গ্রান্ট প্রোগ্রামের দ্য এক্সপোর্ট রেডিয়েন্স ফান্ড (ইআরএফ) হিসেবে ১৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান করা হবে। এমপিপিই পণ্যসামগ্রী উৎপাদনে সক্ষম প্রতিষ্ঠানগুলো এ অনুদার পাওয়ার যোগ্য হবেন। এ অনুদানের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অনুদান আবেদনকারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিভুক্ত হলে এ প্রকল্প থেকে ৬০ শতাংশ অনুদান পাবেন আর আবেদনকারীর অংশগ্রহণ থাকবে ৪০ শতাংশ। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে এখন মেডিক্যাল পণ্যের খুবই প্রয়োজন। কোভিড-১৯ বিশ্বের অর্থনীতিকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিশ্বব্যাংক মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনে সহযোগিতা দিতে এগিয়ে এসেছে। এ অনুদানের মাধ্যমে মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উৎসাহিত হবে। কেবল স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বৈদেশিক বাজারে রফতানির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারাও এ কর্মসূচীর মাধ্যমে সুবিধা পাবেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ কর্মসূচী একটি মাইলস্টোন। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন, ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট ও ক্লিনিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট তৈরিতে যুক্ত উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। এ ধরনের সহায়তা সময়োপযোগী পদক্ষেপ। আমাদের দক্ষতা দিয়ে এ কর্মসূচীকে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ তহবিলের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের মানুষ উপকৃত হবে। সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করছে। এই সময় বিশ্বব্যাংকের এই সহায়তা দেশে মেডিক্যাল পণ্যসামগ্রী উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এজন্য তিনি বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। তবে উদ্যোক্তারা যাতে কমমূল্যে মেডিক্যাল পণ্য সরবরাহ করতে পারেন সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।

এছাড়া বৃহৎ শিল্পের ক্ষেত্রে অনুদানের পরিমাণ হবে ৫০ শতাংশ। যেসব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে এ অনুদান প্রযোজ্য হবে তা হলো পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই), ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইক্যুইপমেন্ট। এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন ও কারিগরি মানের উন্নয়ন, প্যাকেজিং ও বৈচিত্র্য আনয়ন এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন প্রণয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকান্ড যেমন- গবেষণা, পণ্য উন্নয়ন, টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমপন, অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইআরএফ ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের টিম লিডার ডেভ রঙ্গানিকালো, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) এবং এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান।