প্রচ্ছদ

করোনাভাইরাস কেড়ে নিল লক্ষ মানুষের তাজা প্রাণ

  |  ১৬:০৪, এপ্রিল ১৮, ২০২০
www.adarshabarta.com

আদর্শ বার্তা ডেস্ক :

নভেল করোনাভাইরাসের মানবদেহে সংক্রমণ ঘটেছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। তার এক মাসের মধ্যে এই বছরের শুরুতে ১১ জানুয়ারি তা ঘটেছিল প্রথম মৃত্যু। আর তার ঠিক তিন মাসে মৃতের সংখ্যা লক্ষ ছাড়াল।

নতুন ধরনের এই ভাইরাস প্রতিরোধে এখনও নেই টিকা, নেই নির্দিষ্ট কোনো ওষুধও; ফলে থমকে যাওয়া বিশ্বে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে, যা কতদূর যাবে তা এখনও অনিশ্চিত।
এই মহামারী পর্যবেক্ষণ করে আসা জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি শুক্রবার রাতে দেওয়া হালনাগাদ তথ্যে ১ লাখ ৩৭৬ জন মানুষের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে।

এই সময় পর্যন্ত বিশ্বের ১৮৫ দেশ ও অঞ্চলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৫০ হাজার ২১০ জন। আর আক্রান্তদের মধ্যে ‍সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬৯ জন।

করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আক্রান্তদের মধ্যে ২ শতাংশের মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল।

সেটা ছিল ফেব্রুয়ারি মাসের ঘটনা; তারপর পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে ৩ মার্চ বলেছিল, মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৪ শতাংশে যেতে পারে।

কিন্তু মৃতের সংখ্যা যখন লাখ ছাড়াল, তখন দেখা যাচ্ছে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬ শতাংশ মৃত্যুর করাল গ্রাসে পড়ছে।

বিপর্যস্ত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যে গতিতে বাড়ছে, তাতে মৃত্যুর হার যে কোথায় যাবে, তা এখন অনুমান করতে নারাজ অনেক গবেষক।

যে সব দেশে সর্বাধিক মৃত্যু

ইতালি: মৃত্যু ১৮ হাজার ২৭৯; আক্রান্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৬; মৃত্যুর হার ১২.৭ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্র: মৃত্যু ১৬ হাজার ৪৭৮; আক্রান্ত ৪ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৭; মৃত্যুর হার ৩.৬ শতাংশ।

স্পেন: মৃত্যু ১৫ হাজার ৪৪৭; আক্রান্ত ১ লাখ ৫৩ হাজার ২২২; মৃত্যুর হার ১০.১ শতাংশ।

ফ্রান্স: মৃত্যু ১২ হাজার ২২৮; আক্রান্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮১; মৃত্যুর হার ১০.৩ শতাংশ।

যুক্তরাজ্য: মৃত্যু ৯ হাজার ৯৯৩; আক্রান্ত ৬৫ হাজার ৮৭২; মৃত্যুর হার ১২.১ শতাংশ।

ইরান: মৃত্যু ৪ হাজার ১১০; আক্রান্ত ৬৬ হাজার ২২০; মৃত্যুর হার ৬.২ শতাংশ।

চীন: মৃত্যু ৩ হাজার ৩৩৯; আক্রান্ত ৮২ হাজার ৮৮৩; মৃত্যুর হার ৪ শতাংশ।জার্মানি: মৃত্যু ২ হাজার ৬০৭; আক্রান্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ১৮১; মৃত্যুর হার ২.২ শতাংশ।

ভারত: মৃত্যু ২২৬; আক্রান্ত ৬ হাজার ৭২৫; মৃত্যুর হার ৩.৪ শতাংশ।

পাকিস্তান: মৃত্যু: ৬৫; আক্রান্ত ৪ হাজার ৪৪৯; মৃত্যুর হার ১.৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ: মৃত্যু ২৭; আক্রান্ত ৪২৪; মৃত্যুর হার ৬.৩ শতাংশ।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে মানবদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা শনাক্ত হয়। তার প্রায় এক মাস পর প্রথম মৃত্যুটি চীনে ঘটেছিল ১১ জানুয়ারি।
চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল প্রায় এক মাস পর ২ ফেব্রুয়ারি ফিলিপিন্সে। সেদিন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৬২।

মৃতের সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছেছিল ১০ ফেব্রুয়ারিতে। অর্থাৎ প্রথম মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছতে লেগেছিল ঠিক এক মাস। এরপর মৃতের সংখ্যা দুই হাজারে যেতে সময় লাগে ৮ দিন।

তার এক মাস পর ১৯ মার্চ মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ায়। এরপর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু।

১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ৬ দিন

২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ৬ দিন

৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ৩ দিন

৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন

৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন

৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন

৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন

৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন

৯০ হাজার থেকে ১ লাখে যেতে সময় লাগে- ২ দিন।

অর্থাৎ এখন প্রতি দুই দিনে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার করে বাড়ছে।

তবে ইতালি ও স্পেনে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাওয়ায় ৭ এপ্রিলের পর থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির গতি সামান্য হলেও কমছে।