প্রচ্ছদ

রানির মৃত্যু: ১০ দিনের অনুষ্ঠান সূচি

  |  ০৮:৪৮, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২২
www.adarshabarta.com

Manual7 Ad Code

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু সংবাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময় থেকে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পর্যন্ত ঘটনাগুলো আগে থেকেই ঠিকঠাক করা আছে।

এ নিয়ে প্রস্তুতি আগে থেকে এতটাই গোছানো ছিল যে, রানির মৃত্যু ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে নিয়ম করে প্রতিবছর একটা মহড়া দেওয়া হয়। খবর বিবিসির।

বৃহস্পতিবার বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে রানির মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহগুলোর কাউন্টডাউন শুরু হবে।

ডি-ডে
বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে একটি ‘কল কাসকেড’ হবে, অর্থাৎ রানির ব্যক্তিগত সচিব প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে শোক সংবাদটি জানাবেন। এর পর সংবাদটি ক্যাবিনেট সেক্রেটারি এবং প্রাইভি কাউন্সিলের অফিসে পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রাইভি কাউন্সিল মূলত রানির পক্ষে সরকারি কাজের সমন্বয় করে। এর পরই কেবল ‘সরকারি বিজ্ঞপ্তি’ দিয়ে জনসাধারণকে রানির মৃত্যুর সংবাদ জানানো হবে।

Manual6 Ad Code

রাজকীয় বাসভবন, হোয়াইট হল এবং অন্যান্য সরকারি ভবনের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে, রাজপরিবারের ওয়েবসাইটটি রানির মৃত্যুর সংক্ষিপ্ত বিবৃতিসহ একটি কালো পৃষ্ঠায় পরিবর্তিত হবে। সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতেও কালো ব্যানার যুক্ত করা হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে বিবৃতি দেবেন।

রীতি অনুযায়ী বাকিংহ্যাম প্যালেসে রেলিংয়ে মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণাসংবলিত বিবৃতি ঝোলানো হবে। আর এ সময় ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে এবং সেন্ট পলস ক্যাথেড্রালে দুপুরে ঘণ্টা বাজবে।

Manual1 Ad Code

হাইড পার্ক এবং টাওয়ার হিলে বন্দুকের গুলি ছুড়ে স্যালুট জানানো হবে এবং জাতীয়ভাবে নীরবতা পালন করা হবে।

Manual2 Ad Code

রাজা চার্লস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম দর্শনার্থীদের সামনে আসবেন। মৃত্যুর পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পূর্ণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিকল্পনায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তির জন্য আর্ল মার্শালের (বংশানুক্রমে রাজকীয় শীর্ষ কর্মকর্তা) সঙ্গে দেখা করবেন। রাজা চার্লস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশ এবং কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন, যা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

ডি-ডে-এর পরের দিন
অ্যাক্সিশন কাউন্সিল বা অভিষেক পরিষদ, যেটিতে রয়েছেন সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং প্রাইভি কাউন্সেলররা— তারা সকাল ১০টায় সেন্ট জেমস প্রাসাদে মিলিত হবেন। এখানে নতুন রাজার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে। এ ঘোষণা সেন্ট জেমস প্যালেসের বারান্দা থেকে জনসমক্ষে পাঠ করা হবে। লন্ডন শহরের রয়্যাল এক্সচেঞ্জে আরও একটি ঘোষণা পাঠ করা হবে। বিকালে নতুন রাজা প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ, বিরোধী দলের নেতা, ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ এবং ওয়েস্টমিনস্টারের ডিনের সঙ্গে অন্য দর্শনার্থীরা থাকবেন।

পার্লামেন্টে শ্রদ্ধা জানানো হবে। অভিষেক পরিষদের জন্য পতাকা পূর্ণ উত্তেলিত থাকবে। ২৪ ঘণ্টার পতাকা এভাবে থাকবে। এর পর আবার অর্ধনমিত হবে এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরের দিন পর্যন্ত এভাবেই থাকবে।

ডি-ডের তৃতীয় দিন
রানির কফিন বালমোরাল থেকে সড়কপথে হলিরুড হাউসের প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হবে। এডিনবার্গ, কার্ডিফ ও বেলফাস্টে স্বনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে মধ্যাহ্নে একযোগে নতুন রাজার নাম ঘোষণা করা হবে। পার্লামেন্টে শ্রদ্ধাঞ্জলি অব্যাহত থাকবে।

ডি-ডের চতুর্থ দিন

রয়্যাল মাইল বরাবর হলিরুড থেকে সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রাল পর্যন্ত রাজপরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে একটি আনুষ্ঠানিক শোকযাত্রা হবে। সেই অনুষ্ঠানের পরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রাল উন্মুক্ত করা হবে। আর রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জানানো হবে লন্ডনে।

লন্ডন ব্রিজ সমতটের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রাজা চার্লস ওয়েস্টমিনস্টার প্রাসাদে যাবেন। সেখানে তাকে সমবেদনা জানানো হবে। এর পর এডিনবার্গে যাওয়ার কথা রয়েছে। রাজা হিসেবে তার প্রথম কর্ম চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হলিরুড হাউসের প্রাসাদে যাবেন। এর পর সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার তার প্রথম দর্শন পাবেন। স্কটিশ পার্লামেন্টে শোক প্রস্তাব আনা হবে।

ডি-ডের পঞ্চম দিন
সন্ধ্যার পর রানির কফিন এডিনবার্গ ওয়েভারলি স্টেশনে স্থানান্তরিত হবে। সেখান থেকে রাতেই রাজকীয় ট্রেনে পরের দিন সকালে লন্ডনের সেন্ট প্যানক্রাস স্টেশনে পৌঁছানোর কথা।

রাজা চার্লস উত্তর আয়ারল্যান্ডে যাবেন, সেখানে হিলসবরো ক্যাসেলে তাকে সমবেদনা জানানো হবে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্য প্রার্থনার জন্য বেলফাস্টের সেন্ট অ্যানস ক্যাথেড্রালে যোগ দেবেন চার্লস।

বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে ওয়েস্টমিনস্টার হলো পর্যন্ত রানির কফিনবাহী একটি শোকযাত্রা হবে।

ডি-ডের ষষ্ঠ দিন

সেদিন লন্ডনে আনুষ্ঠানিকতার কয়েক ঘণ্টা আগে কফিনটি বাকিংহ্যাম প্যালেসে পৌঁছাবে।

শবযাত্রার আগে প্রথম বড় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে— রানির কফিন বাকিংহাম প্যালেস থেকে ওয়েস্টমিনস্টার হলে নেওয়া। সেখানে পাঁচ দিন রাখা হবে। রানির কফিনের আগমন উপলক্ষ্যে একটি সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধার সময় সাধারণ জনগণও রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাবেন। কফিনটি ওয়েস্টমিনস্টার হলের মাঝখানে একটি সুসজ্জিত শবমঞ্চে রাখা হবে। দৈনিক ২৩ ঘণ্টা জনসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ডি-ডের সপ্তম দিন
রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অব্যাহত থাকবে।

Manual6 Ad Code

ডি-ডের অষ্টম দিন
রাজা চার্লস কার্ডিফের লাল্যান্ডফ ক্যাথেড্রালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওয়েলসে যাবেন। এর পর ওয়েলশ সেনেডে (পার্লামেন্ট) যাবেন এবং সদস্যদের সমবেদনা নেবেন। প্রথমে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ওয়েলশের ফার্স্ট মিনিস্টার।

এই রানির আমলে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ১৪ জন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, ১৪ জন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা লন্ডনে আসতে শুরু করবেন।

ডি-ডের নবম দিন
রাজা চার্লস বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা গভর্নর জেনারেল এবং প্রধানমন্ত্রীদের অভ্যর্থনা জানাবেন।

ডি-ডের দশম দিন
শবযাত্রার প্রাক্কালে চার্লস বিদেশি রাজপরিবারের সদস্যদের স্বাগত জানাবেন। ভিআইপি বিদেশি অতিথিরা রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধানুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

ডি-ডের একাদশ দিন
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রাষ্ট্রীয় শবযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে শবযাত্রা অ্যাবেতে নেওয়া হবে। সারা দেশে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। এক ঘণ্টার একটি আনুষ্ঠানিকতার পর বড় পরিসরে আনুষ্ঠানিক শবযাত্রা হাইড পার্কে যাবে। সেখানে কফিনটি সাঁজোয়া গাড়ি থেকে রাষ্ট্রীয় শবযানে স্থানান্তরিত হবে এবং কফিনটি উইন্ডসরে নেওয়া হবে। উইন্ডসরে শবযাত্রার পর উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে শেষ বিদায় জানানোর পর রাজকীয় ভল্টে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে সমাধি দেওয়া হবে।

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code