প্রচ্ছদ

বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত: মার্কিন প্রতিবেদন

  |  ২৩:৪৪, মার্চ ৩১, ২০২১
www.adarshabarta.com

Manual1 Ad Code

মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধি :

সংবিধানে নিশ্চয়তা থাকলেও বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অনেকটাই সংকুচিত বলে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ৩০ মার্চ মঙ্গলবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সাংবাদিকেরাও হয়রানি ও নির্যাতনের ভয়ে সরকারের সমালোচনা থেকে নিজেদের অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছেন। বাংলাদেশের সংবিধানে মতপ্রকাশ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখতে সরকার মাঝেমধ্যেই ব্যর্থ হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপক প্রয়োগের বিষয়টিও উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে।

রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধে সাজা বাড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ করে এতে বলা হয়, এতে বিদ্বেষমূলক প্রচার কমানো গেলেও কোনগুলো এই আইনে অপরাধ ধরা হবে, তা সুনির্দিষ্ট নয়। ফলে সরকারের পক্ষে এই আইনের যত্রতত্র প্রয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

Manual6 Ad Code

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর সরকার তার কার্যক্রম নিয়ে ওঠা প্রশ্ন চাপা দিতে ব্যাপকভাবে এই আইন ব্যবহার করেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে মানা করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

Manual7 Ad Code

গত বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক, অধিকারকর্মীসহ অন্তত ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার তথ্যটি উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এই আইন যে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছ, সম্পাদক পরিষদের সেই প্রতিক্রিয়া জানানোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

Manual3 Ad Code

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারের সমালোচনাকারী প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমকে সরকারের চাপে থাকতে হচ্ছে। আর লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষমতার কারণে বেসরকারি টেলিভিশনগুলোর ওপরও সরকারের নিয়ন্ত্রণ কাজ করছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি বিজ্ঞাপন অংশত বন্ধ এবং বিজ্ঞাপন না দিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে গোয়েন্দা সংস্থার চাপ দেওয়ার অভিযোগ এসেছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে। যে গণমাধ্যম সমালোচনা করছে, তাদের শাস্তি দিতে বিজ্ঞাপন আটকে দেওয়ার এই অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

Manual3 Ad Code

এ পরিস্থিতিতে গণমাধ্যম মুক্তভাবে কাজ করা থেকে অনেকটাই গুটিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের অভিযোগ, সরকার কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার চাপে পড়ার শঙ্কায় তাদের অনেক প্রতিবেদন প্রকাশ না করে চাপা দিয়ে দিচ্ছেন তাদের প্রতিষ্ঠানের সংবাদ ব্যবস্থাপকেরা।

স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা দিতে ইন্টারনেটে নিয়ন্ত্রণের কথাও উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে। গবেষণার ক্ষেত্রেও কিছু কিছু নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র।

মহামারির নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সরকারের বাধা দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে সরকার–সমর্থকদের বাধার কথাটিও এতে এসেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার ও তার এজেন্টরা এ ধরনের বেআইনি কাজ করছে বলে বহু অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী পররাষ্ট্র অধিদপ্তর প্রতিবছর মানবাধিকার অনুশীলনের অবস্থা তুলে ধরে দেশভিত্তিক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। তবে এই প্রতিবেদনে কোনো ধরনের আইনি সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় না। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনাই এর লক্ষ্য।

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code