প্রচ্ছদ

সৌদি আরব রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত

  |  ০৬:২৫, মার্চ ২৭, ২০২১
www.adarshabarta.com

মোঃ নাসির, বিশেষ প্রতিনিধি :

সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে আজ বিভিন্ন কর্মসুচীর মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সকালে দূতাবাস চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম(বার)। এরপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

মহান স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দূতাবাস কর্তৃক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় ও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত অভিবাসিরা যোগ দেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার অবিস্মরণীয় নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। রাষ্ট্রদূত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা –বোনকে।

রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে বরাবরই রুখে দাঁড়িয়েছেন। ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭০ সালের নির্বাচনের ধারাবাহিকতায়, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ মুক্তিকামী লাখো জনতার সামনে তাঁর বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।“ ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা নিরীহ বাঙ্গালিদের ওপর হামলা করে গণহত্যা শুরু করলে জাতির পিতা ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলার সপ্ন দেখতেন। তাঁর এই সপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীলে দেশের কাতারে উন্নীত হবার জাতিসংঘের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য এক বিরাট অর্জন। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত করার রূপকল্প গ্রহন করেছেন এবং তা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলমান নিষেধাজ্ঞা মেনেই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সমূহ উদযাপন করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তিনি প্রবাসীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করার আহবান জানান।

দূতাবাসের কার্যালয় প্রধান ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ এর উপস্থাপনায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও দেশ, জাতির অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

মহান স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সৌদি আরবের বহুল প্রচারিত আরবী পত্রিকা ‘ওকাজ’ ও ইংরেজি পত্রিকা ‘আরব নিউজ’ এ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।