প্রচ্ছদ

নিউইয়র্ক গভর্নরের সর্বোচ্চ সম্মান পেল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুবর্ণ

  |  ১৬:৪৭, অক্টোবর ২৮, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual7 Ad Code

হাকিকুল ইসলাম খোকন, বাপসনিউজ, আইবিএন :

বিশ্বে সবচেয়ে কম বয়সী প্রফেসর সুবর্ণ আইজ্যাক বারী নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নরের কাছ থেকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন। মাত্র সাড়ে ৮ বছরে তিনি এ সম্মান অর্জনের গৌরব অর্জন করলেন। তিনি এমন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বালক! ঘটনাটি ১৭ অক্টোবর হঠাৎই ঘটে গেল।

Manual8 Ad Code

সুবর্ণের বাবার নাম রাশীদুল বারী। তিনি তার বাবা ডা. মোহাম্মদ মঈন উদ্দিনকে নিয়ে সিটির ব্রোনব্রিজের সেইফ মেডিকেলে অপেক্ষা করছিলেন। চিকিৎসক তার বাবার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য সময় দিয়েছিলেন। হঠাৎ করেই বারী তার স্ত্রীর ফোন পেলেন। সুবর্ণের মা ফোনের ওপার থেকে কাঁদছিলেন। রাশিদুল বারী ভেবেছিলেন খারাপ কিছু ঘটেছে।

Manual5 Ad Code

সুবর্ণের মা বললেন, একটি সুসংবাদের কারণে তিনি কাঁদছেন। রাশীদুল বারী ফোনটি স্পিকারে দিলেন, যাতে তার বাবাও শুনতে পান। সেফ মেডিকেলের পরিচালক জিলানী, নার্স ও রোগী সবাই স্পিকারের চারপাশে জড়ো হলেন। তবে সুবর্ণের মা ফোনের ওপাশে কান্না থামাতে পারছিলেন না। কেউ একজন বললেন, ‘বারী ভাই, সুবর্ণ সম্ভবত নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।’ বারী অবশ্য জানতেন, এ বছর নোবেল পুরস্কার জয়ের সময় কয়েক দিন আগে শেষ হয়ে গেছে। সুবর্ণের মা জানালেন, ‘কিছুক্ষণ আগে নিউইয়র্কের স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো তার ডেলিগেট আমাদের বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তারা সুবর্ণকে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তারা স্টেট গভর্নরের স্বীকৃতিপত্র সুবর্ণের কাছে হস্তান্তর করেছেন।’ ততক্ষণে ডা. মুহাম্মদ মঈন উদ্দিনের কানে এই খবর পৌঁছে গেল। তিনি সবাইকে অভিনন্দন জানাতে বাইরে বেরিয়ে এলেন। ১৯.৪ মিলিয়ন নিউইয়র্কারের পক্ষে স্বীকৃতিপত্রে গভর্নর লিখেছেন, ‘সুবর্ণ আইজ্যাক বারী, গণিত ও বিজ্ঞানের প্রতি আপনার আবেগের মাধ্যমে টেররিজম মুক্ত একটি বিশ্ব গড়ার জন্য আপনি বিশাল অবদান রেখেছেন। এম্পায়ার স্টেট অন্যকে সাহায্য করার জন্য উৎসর্গীকৃত মহান মানুষদের স্বীকৃতি দেয়। আপনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি খুব অল্প বয়সেই বিশ্বে ইতিবাচক পার্থক্য তৈরি করেছেন গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের মাধ্যমে, সন্ত্রাসবিরোধী ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে, বইয়ের মাধ্যমে! আপনি বিশ্বজুড়ে চাইল্ড প্রডিজি হিসেবে পরিচিত। গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে আপনার অর্জন প্রশংসার যোগ্য। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে বিশ্বের বর্তমান ঘটনা সম্পর্কে আপনার বিস্ময়কর সচেতনতা এবং বিশ্বশান্তি প্রচারের জন্য সেই সচেতনতা ব্যবহার করার ইচ্ছা আমাকে মুগ্ধ করে। আপনার ভ্রাতৃত্ব, প্রজ্ঞা ও সহানুভূতির মধ্য দিয়ে আপনি নিজেকে গভীর চরিত্র ও মূল্যবোধের সিঁড়ি হিসেবে আলাদা করেছেন। আপনার কাজের জন্য নিউইয়র্কের পক্ষে আপনাকে সম্মানিত করতে পেরে আমি গর্বিত। আবারও সব নিউইয়র্কারের পক্ষ থেকে আমি আপনার প্রশংসা করছি। কারণ ‘দ্য লাভ’ বইয়ের মাধ্যমে আপনি সব ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহনশীলতা জাগানোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি এনে দিয়েছেন। অভিনন্দন। অব্যাহত সাফল্য ও সুখের জন্য শুভ কামনা।হেনরি কিসিঞ্জার একসময় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আমেরিকানদের কাছে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেন। অথচ আজ একটি বাঙালি শিশু আমেরিকার শীর্ষ রাজ্য থেকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেলেন। সুবর্ণের জন্ম ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল নিউইয়র্কের একটি বাঙালি পরিবারে। খুব অল্প বয়সে বিশ্বে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে পিএইচডি স্তরের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের সমস্যাগুলো সমাধান করতে সক্ষম হওয়ার জন্য। তিনি ২০১৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন বিজ্ঞানী হিসেবে। নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বিজ্ঞানী হিসেবে তাকে দিল্লিতে ‘গ্লোবাল চাইল্ড প্রডিজি অ্যাওয়ার্ড’ দেন। মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ভিজিটিং অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিয়েছে পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে। সবচেয়ে বড় কথা, ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক সিটি কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. লিসা কোইকো সুবর্ণকে ‘আমাদের সময়ের আইনস্টাইন’ উপাধি দেন।

Manual2 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code