প্রচ্ছদ

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই

  |  ১৫:৫২, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual4 Ad Code

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

Manual5 Ad Code

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম (৭১) আর নেই। আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

অ্যাটর্নি জেনারেলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ইন্তেকাল করেছেন।’

Manual1 Ad Code

অ্যাটর্নি জেনারেলের মৃত্যুতে আইনমন্ত্রী গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ এবং তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

Manual2 Ad Code

এর আগে আজ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মেয়ের জামাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ রেজাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে অ্যাটর্নি জেনারেল জ্বর অনুভব করেন। পরের দিন ৪ সেপ্টেম্বর সকালে তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে ওই দিনই তাঁকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। তবে ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে হার্ট অ্যাটাক হলে তাঁকে দ্রুত আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তাঁর জ্ঞান স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল, কিন্তু হৃদযন্ত্র স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না। তবে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে আগের তুলনায় তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ২০ সেপ্টেম্বর তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু ২১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করছিল না। অবস্থা সংকটাপন্ন হতে থাকে।’

সংসার জীবন

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ১৯৪৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের মৌছামান্দ্রা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাহবুবে আলম স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ছেলে সাংবাদিক এবং মেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।

শিক্ষাজীবন

মাহবুবে আলম শিক্ষাজীবন শুরু করেন কাজির পাগলা এটি ইনস্টিটিউশনে। ১৯৬৩ সালে ঢাকার আরমানিটোলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৬৫ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৬৯ সালে লোক প্রশাসনে এমএ পাস করেন। ১৯৭২ সালে ঢাকা সিটি ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৯ সালে ভারতের নয়াদিল্লিতে সংবিধান এবং সংসদীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে আন্তর্জাতিক আইন ও সংসদীয় পদ্ধতি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন

প্রবীণ এই আইনজীবী ১৯৭২ সালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত নৈশ বিভাগে শিক্ষকতা অব্যাহত রাখেন। আইনজীবী হিসেবে ১৯৭৩ সালে ঢাকা জজ কোর্টে এবং ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন। ১৯৮০ সালে হন আপিল বিভাগের আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন ১৯৯৮ সালে। রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী অর্থাৎ দেশের ১৩তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান ২০০৯ সালে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই পদেই ছিলেন তিনি। এর আগে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবে আলম।

২০০৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন মাহবুবে আলম। ২০০৫-২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

Manual2 Ad Code

রাজনৈতিক জীবন

মাহবুবে আলম ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা অন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলনে ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার অভিযান চালান। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে রমনা রেসকোর্স ময়দানে মিছিল নিয়ে অবস্থান করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি গ্রামে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহায়তা করেন। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী ঐক্যজোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী এম এ জি ওসমানীর পক্ষে এম কোরবান আলী ও অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নিজ এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে শেষমুহূর্তে তিনি মনোনয়ন পাননি।

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code