প্রচ্ছদ

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান-এর ফেইসবুক থেকে

  |  ১৯:২০, জুন ২৯, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual6 Ad Code

করোনা টেস্টের জন্য ‘ফি’!

সরকার করোনা টেস্টের জন্য ‘ফি’ আদায় শুরু করবে বলে আলোচনা চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নাকি সেদিকেই হাঁটছে। এ কাজটি হবে দুর্দিনে সবচেয়ে জন বিরোধী একটি পদক্ষেপ। এতে সরকারের কোন সাশ্রয় হবে না, চোরদের পকেটে টাকা চলে যাবে। সরকারের খাতে সমালোচনাটাই জমা হবে।
RT-PCR টেস্ট হচ্ছে করোনা রোগী সনাক্তকরণে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বা একমাত্র স্বীকৃত পদ্ধতি যা WHO কর্তৃক অনুমোদিত। তবে এ প্রক্রিয়াটি জটিল, ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ । দ্রুত PCR মেশিন সংগ্রহ বর্তমান সময়ে কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। তবে নমুনা সংগ্রহ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ণয় করে রোগীকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবল, যা জরুরী ভিত্তিতে তৈরি সম্ভব নয়।

বর্তমানে প্রায় ৭০ টি ল্যাবে এ কার্যক্রম চলছে। দৈনিক প্রায় বিশ হাজার টেস্ট করা হচ্ছে। ল্যাবের সংখ্যা আরো বাড়বে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কত বাড়াতে পারবো। দৈনিক এক লক্ষ করে টেস্ট করলে সতেরো কোটি মানুষের বিশ শতাংশকে টেস্ট করতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে। দেশের সকলের PCR টেস্ট করতে সময় লাগবে কমপক্ষে পাঁচ বছর। এত দিনে হয় আমরা মরে যাব বা করোনা মরে যাবে।

করোনা টেস্ট করার চেয়ে উপসর্গ দেখে আইসোলেশন বা উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসার দিকে বেশি জোর দিতে হবে। PCR টেস্ট এ একবার কারো পজিটিভ আসলে তাকে আর দ্বিতীয়বার টেস্ট করার দরকার নেই। ১৪-২১ দিনের মধ্যে যদি উপসর্গ চলে যায় ধরে নিতে হবে সে সুস্থ হয়ে গেছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার এন্টিবডি টেস্ট করানো যেতে পারে। এটা শুধু রোগীর সান্তনা এবং গবেষণার জন্য কাজে লাগবে।

Manual3 Ad Code

অন্তত পজিটিভ রোগীদের দ্বিতীয় -তৃতীয় বার PCR টেস্ট বন্ধ করলেই ‘কিট’ সংকটের বড় একটা সুরাহা হবে। উপসর্গ বিহীন কারো PCR টেস্ট করার প্রয়োজন নেই। ব্যক্তি যদি নিজেই করোনা আক্রান্ত বলে সন্দেহ করে তাকে আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হোক। উপসর্গ স্পষ্ট হলে অর্থাৎ শ্বাসকষ্টের মত জটিলতা সৃষ্টি হলেই কেবল হাসপাতালে ভর্তি করা হোক যাতে প্রয়োজনে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া যেতে পারে।

Manual1 Ad Code

PCR টেস্টের খরচ অর্ধেকে নামানো যায় যদি একটি কিট দিয়ে দুইজনের পরীক্ষা করানো হয়। প্রক্রিয়াটি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সফলভাবে প্রয়োগ করেছে এবং স্বীকৃতিও পেয়েছে।
অযথা উপসর্গ বিহীন রোগীদের টেস্ট অথবা প্রথম টেস্টে পজিটিভ আসা রোগীদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার PCR টেস্ট না করে, উপসর্গ চলে যাওয়ার পর সুস্থ্য ঘোষণা করুন বা এন্টিবডি টেস্ট করুন।

ফী ধার্য করে ভীর কমানো যাবে না। অনেকে এখন বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই টেস্ট করে নিশ্চিত হতে চাচ্ছে। অনেকেটাই এরকম, ” আমার বান্ধবীর বাসার সবাই দুইবার করে টেস্ট করে ফেলেছে, আমরা একবারও করলাম না! ”

আর একটা বিষয় আমার অবাক লাগে, রেড জোনের অতি সংক্রমিত এলাকা চিহ্নিত করতে এত সময় কেন লাগছে! এই কাজের জন্যও কেউ ব্যবসায়ের ফাঁদ পাতছে না তো?
গত চৌদ্দ দিনে যাদের করোনা পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে তাদের নিজের অথবা পরিবারের কারো টেলিফোন নম্বরে এসএমএস করে তাদের ফলাফল জানানো হয়েছে। পজিটিভ টেলিফোন নম্বরধারীরা এই মুহূর্তে কোথায় আছে এটা পুলিশ কর্মকর্তা আমার ছাত্র মোল্লা নজরুলকে দিলেই এক ঘন্টার মধ্যে জানিয়ে দিতে পারবে মোবাইল ট্র‍্যাকিং এর মাধ্যমে। ট্র‍্যাকিং এ সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী যেই পাড়ায়, মহল্লায় বা রোডে পাওয়া যাবে সে জায়গাটুকু লকডাউন করে দিতে হবে। তার আগে স্থানীয় প্রশাসন লকডাউনকৃত এলাকার যাবতীয় বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এলাকাবাসী বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় তা কার্যকর করবে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লাগাতার মিটিং এর কোন প্রয়োজন নেই।

Manual4 Ad Code

(অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান
উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তিনির ফেসবুক ওয়াল থেকে সংগ্রহ করেচেন মোঃ নাসির, নিউ জার্সি, আমেরিকা থেকে।)

Manual4 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code