প্রচ্ছদ

ডিসেম্বরে অভিনব মহাজাগতিক দৃশ্য দেখতে পাবে বিশ্ববাসী!

  |  ১৯:৫১, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual4 Ad Code

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

২০২০ সাল বিশ্বে বহু মানুষের জন্যই নানা বিপর্যয়, উৎকণ্ঠা আর ক্ষতির একটা বছর। কিন্তু গ্রহ-নক্ষত্রের জগত সেই সব মানুষকে এই ডিসেম্বর মাসের আকাশে চমক জাগানো বর্ণচ্ছটা উপহার দিতে তৈরি হয়েছে। নিজের ঘরে বসেই আকাশের এই অভিনব দৃশ্য আপনি উপভোগ করতে পারবেন, তার জন্য টেলিস্কোপ বা দামী কোন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে না।

ডিসেম্বরের রাতের আকাশে পৃথিবীর সব জায়গা থেকে দেখা যাবে অভিনব কিছু মহাজাগতিক দৃশ্য। দুটি গ্রহের মিলে এক হয়ে যাওয়া, সবচেয়ে বর্ণাঢ্য উল্কা বৃষ্টি এবং সূর্যের পূর্ণ গ্রহণ… এসব চমকপ্রদ মহাজাগতিক ঘটনা দেখতে প্রয়োজন শুধু পরিষ্কার আকাশ।

আকাশের কোথায় এবং কখন এসব দেখা যাবে তা এবার জেনে নিন…

১৩-১৪ ডিসেম্বর : জেমিনিডস্ নামে উল্কার বৃষ্টি
আকাশের দিকে তাকিয়ে হয়ত গত কয়েক মাসে আপনি অন্য উল্কার বৃষ্টি দেখে থাকতে পারেন, কিন্তু ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর যে উল্কা বৃষ্টি হতে যাচ্ছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন সেটা হবে ‘সব উল্কা বৃষ্টির রাজা’। দেখা যাবে পৃথিবীর যে কোন জায়গা থেকে।

ধূমকেতুর রেখে যাওয়া ধুলিকণায় ভরা আস্তরণের মধ্যে দিয়ে যখন পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে, তখনই সাধারণত উল্কা বৃষ্টি ঘটে থাকে। কিন্তু জেমিনিডস উল্কার বৃষ্টিপাত ভিন্ন ধরনের। জেমিনিডস উল্কার বৃষ্টি হয় যখন ৩২০০-ফিটন নামে একটি গ্রহাণুর ছেড়ে যাওয়া ধুলিকণার আস্তরের মধ্যে দিয়ে পৃথিবী যায়- এভাবেই ব্যাখ্যা করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর আমরা দেখতে চলেছি জেমিনিডসের উল্কা বৃষ্টি। এসময় প্রতি ঘন্টায় দেড়শর মত উল্কার ধারা বৃষ্টি হবে বলে জ্যোতির্বজ্ঞানীরা বলছেন। অর্থাৎ প্রতি ঘন্টায় আমরা ১৫০ আলোর ফোঁটার বিচ্ছুরণ দেখতে পাব।

রাতের আকাশ যত অন্ধকার হবে, এই অসাধারণ সুন্দর আলোর রোশনাই তত বেশি উপভোগ করার সুযোগ হবে। এমনকি শহরে যারা থাকেন, কৃত্রিম আলোর কারণে আকাশের প্রাকৃতিক অন্ধকার যারা পুরো মাত্রায় পান না, তাদেরও এই আলোর ঝলকানি দেখার সুযোগ হবে।

Manual2 Ad Code

১৪ ডিসেম্বর : সূর্যের পূর্ণ গ্রহণ
এই দৃশ্য দেখা যাবে চিলে আর আর্জেন্টিনায়। তবে আপনার যদি আকাশে এই গ্রহণ দেখার সৌভাগ্য হয়, মনে রাখবেন সূর্যের দিকে কখনই সরাসরি তাকাবেন না, চোখকে রক্ষা করার জন্য কিছু ব্যবহার করবেন। যে ২৪ মিনিট ধরে এই জাদুকরি মুহূর্ত স্থায়ী হবে, তখন অমাবস্যার চাঁদ তার চলার পথে সূর্যের সামনে এসে পৌঁছবে এবং চাঁদ সূর্যকে সম্পূর্ণভাবে ঢেকে দেবে মাত্র দুই মিনিট ৯.৬ সেকেন্ডের জন্য।

চাঁদ আকারে সূর্যের চেয়ে ৪০০ গুণ ছোট কিন্তু চাঁদ সূর্যের তুলনায় আমাদের অনেক কাছে বলে চাঁদকে অনেক বড় দেখায়, আর সূর্যকে আমরা বহু দূর থেকে অনেক ছোট দেখি। তাই আমাদের চোখের জন্য ‘চাঁদ সূর্যের গোলককে পুরো ঢেকে দিতে সক্ষম।’

Manual1 Ad Code

এভাবে চাঁদ সূর্যের সামনে একই জায়গায় যখন আসে তখন দিনের আকাশে অন্ধকার নেমে আসে। বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকার সর্ব দক্ষিণে একেবারে মাঝ দুপুরের আকাশ পুরো অন্ধকারে ঢেকে যায়।

২১ ডিসেম্বর : বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের মহা সম্মিলন
মহাজাগতিক এই দৃশ্য দেখা যাবে পৃথিবীর সব জায়গা থেকে। আকাশ পরিস্কার থাকলে বৃহস্পতি আর শনি গ্রহকে সবচেয়ে সহজে দেখা যায়।

Manual6 Ad Code

এই গ্রহ দুটির মহা সম্মিলন বলতে বোঝানো হয়, যখন তারা একে অপরের একেবারে সামনাসামনি আসে এবং যখন দেখে মনে হয় তারা দুজনে পুরো এক হয়ে গেছে এবং সম্মিলিতভাবে একক একটা গ্রহ হিসাবে আকাশে জ্বলজ্বল করছে। আর ঠিক সেটাই ঘটতে চলেছে ২১ ডিসেম্বর। খালি চোখে দেখে মনে হবে দুটি গ্রহের মধ্যে তফাৎ মাত্র ০.১ ডিগ্রিরও কম। অর্থাৎ তারা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। এটা মহাজগতে আমাদের দৃষ্টিপথের কেরামতি।

বর্তমানে পৃথিবী ও বৃহস্পতির মধ্যে দূরত্ব ৮০ কোটি কিলোমিটারের বেশি। বৃহস্পতি ও শনির মধ্যেও দূরত্ব প্রায় একইরকম। কিন্তু এই দুটি বিশাল গ্রহকে আমাদের রাতের আকাশে দেখা যায় একটু একটু করে পরস্পরের কাছে সরে আসতে, তারপর একটা সময় আমাদের দেখে মনে হয় তারা মিলে এক হয়ে গেছে। তাদের এই মিলন দেখতে দারুণ লাগবে, বিশেষ করে তাদের এক হয়ে যাবার আগের ও পরের কয়েক দিন দেখা যাবে কীভাবে তারা কাছে আসছে এবং কীভাবে তাদের বদল ঘটছে।

অবশ্যই জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ বিষয়ে উৎসাহীদের জন্য এটা দারুণ একটা ব্যাপার। বায়নোকুলার বা ছোট টেলিস্কোপ থাকলে এমনকী বৃহস্পতির আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো এই চারটি চাঁদও দেখা যায়।

Manual2 Ad Code

দেখতে চাইলে ২১ ডিসেম্বরের আগে ঠিক জেনে নিন আকাশের কোথায় এই দুটি গ্রহ দেখা যায়। দক্ষিণ পশ্চিম দিগন্তে কিছুটা নিচের দিকে, সূর্যাস্তের আধ ঘন্টা পর এই দুই গ্রহকে খুঁজে পাবেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code