প্রচ্ছদ

আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস ২০২০

  |  ১৩:১৫, নভেম্বর ৩০, ২০২০
www.adarshabarta.com

Manual3 Ad Code

সকল ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান

Manual8 Ad Code

হাকিকুল ইসলাম খোকন :

১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছর ০৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও সম্মান প্রদর্শন এবং তাদের কার্যক্রম, সফলতা, সম্ভাবনা ও সমস্যা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যেই এ দিবসটির সূচনা। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো “ঘড়ঃ ধষষ ফরংধনরষরঃরবং ধৎব ারংরনষব”। শত প্রতিকূলতার মাঝেও কতিপয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা নানা ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করছে। শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, খেলাধূলা, রাজনীতিসহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে রয়েছে তাদের সফল পদচারণা। উন্নয়ন নীতিগুলোতে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। ফলে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস বা চলাচল করতে পারছেন না। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সমাজের মূল ধারা থেকে তারা পিছিয়ে পড়ছেন। করোনার সময়েও পিছিয়ে রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। এজন্য সেবাপ্রত্যাশী সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ভিন্ন হটলাইন নম্বরের ব্যবস্থা করা বিশেস করে ইশারা ভাষা ব্যবহারকারীদের জন্য ইশারা ভাষার সুবিধাসহ ভিডিওকলের ব্যবস্থা করা, বাক ও শ্রবণ এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদাভাবে সচেতনতামূলক ছবি ও তথ্য প্রচরণায় ইশারা ভাষা ও ব্রেইলের ব্যবহার নিশ্চিত করা।

Manual6 Ad Code

আজ ৩০ নভেম্বর, সোমবার, সকাল ১১.০০ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস উপলক্ষ্যে দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ, কার ফ্রি সিটিস এলায়েন্স এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট কর্তৃক সম্মিলিতভাবে আয়োজিত ‘সবার জন্য শহরঃ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অধিকার ও সুরক্ষা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলথব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডা এর আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন, অ্যাক্সেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহ প্রতিষ্ঠাতা মহুয়া পাল, এবং বাংলাদেশ হুইলচেয়ার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মোহাসিন। আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ মিঠুন।

দেবরা ইফরইমসন বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী মানুষের শিক্ষা প্রহণের সংখ্যা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই যোগ্যতা অনুযায়ী টিকে থাকতে পারছে না। এর কারণ হচ্ছে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় স্বল্প মাত্রার প্রতিবন্ধী মানুষদের খোঁজা হচ্ছে, কর্মস্থল এর পরিবেশ ভালো না থাকা এবং মানুষ এখনো জানে না কিভাবে বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষের সাথে চলাচল করতে হয়।

মহুয়া পাল বলেন, দেশে এখনো প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্যতার অভাব সর্বত্র কারণ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মানছে না কেউ। তার জন্য কোনো শাস্তির ব্যবস্থাও দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া গণপরিবহন ব্যবস্থা এখনো এখনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব নয়। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বৈষম্য বিরাজমান। যার কারণে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার অর্জনে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

Manual4 Ad Code

মোহাম্মদ মোহসিন বলেন, আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার ১০% প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পার্ক, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থানসহ সকল গণস্থাপনাগুলোতে প্রবেশগম্যতার বিষয়টি এখনও উপেক্ষিত। বর্তমানে আমাদের দেশে পার্ক, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব কোন অবকাঠামো নেই। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সর্বজনীন প্রবশগম্যতা নিশ্চিত করতে পরিবার, সমাজ, সর্বোপরি রাষ্ট্রকে আরও তৎপর হতে হবে।

গাউস পিয়ারী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে প্রতিবন্ধী মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি। যে মানুষটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তিনি মনের আলো জ্বেলে এবং যেসব মানুষ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এবং শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী তারা সৃজনশীল চর্চা দিয়ে, সেই সঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষেরা মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকে আলো ছড়াচ্ছেন চারদিকে। কাজেই কাউকে পিছনে ফেলে নয় বরং সবাইকে সাথে নিয়ে আমাদের এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে।

Manual6 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code