প্রচ্ছদ

দুর্ভোগের শেষ নেই করোনা নিরাময় হলেও

  |  ১৩:০৬, অক্টোবর ০৯, ২০২০
www.adarshabarta.com

মোঃ নাসির, নিউ জার্সি, আমেরিকা থেকে :

করোনা থেকে যেসব মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের বেশির ভাগ পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। যাদের শরীরের ইউমিনিটি সিস্টেম ভালো, তারা অনেকটা স্বাভাবিক জীবনযাপন করাসহ কাজকর্মে ফিরে গেলেও অনেকেই তা পারছেন না। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা অনেকেই নানা ধরনের মানসিক কষ্ট ও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন। চিকিৎসায় কিছুসংখ্যক মানুষ সমস্যা থেকে মুক্তি পেলেও অনেকেই পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছেন না। শরীর ব্যথা, হাত-পায়ের জয়েন্টে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, হয়রান হয়ে যাওয়া, ক্লান্তিবোধ, নিদ্রাহীনতা, মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় করা, কাজ করতে কষ্ট, কোমর ও ঘাড়ে ব্যথা, অস্থিরতাসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন করোনাজয়ীরা। এ কারণে নানা দুশ্চিন্তাও ঘিরে ধরেছে তাদের। এ অবস্থায় কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।

এদিকে অনেকে আবার মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু তারা কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছেও যাচ্ছেন না। যদিও সিটির পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন, তাদের মনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাই তাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। সিটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে পরামর্শ নিলে কিংবা কাউন্সেলিং করলে ইতিবাচক সমাধান মিলতে পারে। সিটির তরফ থেকে বারবার উৎসাহিত করা হলেও রোগীদের সাড়া খুবই কম। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন এমন বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর সবচেয়ে বড় দরকার মানসিক শক্তি। মনে সব সময় সাহস রাখতে হবে। স্বাভাবিক পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। ভয়াবহ দিনের কথা মনে করলে সেখান থেকে বের হওয়া সম্ভব হবে না। তাই মানসিক শক্তি ধরে রেখে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি যেসব শারীরিক লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, সেগুলো নিরাময়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করতে হবে।

নিউইয়র্ক বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক ডাঃ কারল লাটোরটু বলেন তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হলে কী কী সমস্যা হতে পারে, সেটা তার জানা। তার মতে, এসব সমস্যা কাটাতে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। মনোবল চাঙা থাকলে অধিকাংশ সমস্যা থেকে স্বাভাবিকভাবেই বের হওয়া সম্ভব। প্রয়োজনে চিকিৎসার পাশাপাশি ব্যায়াম, হাঁটা ও খেলাধুলা করা যেতে পারে।

তিনি (ডাঃ কারল লাটোরটু )আরো বলেন, কেউ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলেও তার শরীর, হাত-পা, ঘাড় ও কোমরে ব্যথা হতে পারে। বিভিন্ন জয়েন্টেও ব্যথা হতে পারে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সারাক্ষণ একটা ভয় কাজ করতে পারে। তবে এতে ঘাবড়ানোর কারণ নেই। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। যদিও এখন পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না, এসব সমস্যা কত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এ বিষয়ে গবেষণা চলছে। তার মতে, যাদের ব্যথা রয়েছে, তারা চার মাস ভিটামিন ডি খেতে পারেন। তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ খাওয়াই উত্তম।