প্রচ্ছদ

ভয়াবহ বন্যায় নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি ও পেনসিলভানিয়ায় অন্তত ২২ জনের মৃত্যু

  |  ০৫:০১, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
www.adarshabarta.com

আদর্শবার্তা ডেস্ক :
ঘুম থেকে ওঠে বৃহস্পতিবার সকালে নিউইয়র্কবাসী দেখতে পান বাড়ির চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাস চলছে কয়েক ফুট পানির ওপর দিয়ে। এরপর একের পর এক আসতে থাকে মৃত্যুর খবর।
ক্রান্তীয় ঝড় আইডার কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি ও পেনসিলভানিয়ায় অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলের অনেকেই তাদের বাড়ির পানিতে নিমজ্জিত নিজ তলায় আটকা পড়েছেন।
নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সির গভর্নররা তাদের নিজ নিজ রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। নিউইয়র্ক শহরের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও একে ‘আবহাওয়াজনিত ঐতিহাসিক ঘটনা’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন, এ শহরের মানুষ নরক যন্ত্রণা ভোগ করছেন। শুধু নিউইর্ক শহরে ৯ জন মারা গেছেন বলে জানান তিনি।
নিউইয়র্ক শহরের প্রায় সব সাবওয়ে লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি নয়, সড়কে এমন যানবাহনের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। স্থগিত হয়ে যায় অসংখ্য বিমান ও ট্রেনের যাত্রাও।
আইডার কারণে নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে কেবল এক ঘণ্টাতেই অন্তত ৮ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। নিউ জার্সির শহর পাসাইকের মেয়র হেক্টর লরা বলেছেন, একটি গাড়ির ভেতর থেকে ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক মৃতদের অনেকেই বাড়ির বেইজমেন্টে আটকা পড়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বাড়িঘর ও সাবওয়ে স্টেশনে পানি ঢুকতে এবং একাধিক সড়কে বন্যার পানি দেখা গেছে।
নিউইয়র্কের বাসিন্দা জর্জ বেইলি জানান, বন্যা এত ভয়াবহ রূপ নেবে তা ধারণা করেননি তিনি। তিনি বলেন, ‘রাতের খাবারের মাঝখানে আমি গুড়গুড় শব্দ শুনি, পানি তখন আমাদের স্নানঘরের শাওয়ার ড্রেইন থেকে বেরিয়ে আসছিল। আমি এরপর ইউটিলিটি ঘরের মূল পানির লাইন চেক করতে যাই, যখন ফিরে আসি ততক্ষণে লিভিং রুমে এক ফুটের মতো পানি হয়ে গেছে। এত দ্রুত এমনটা হয়েছে যে অবিশ্বাস্য।’
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া বিভাগ নিউ ইয়র্ক শহর, ব্রুকলিন, কুইনস ও লং আইল্যান্ডের একাংশে ‘জরুরি বন্যা পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেছে। ম্যাসাচুসেটস ও রোড আইল্যান্ডে জারি হয়েছে টর্নেডো সতর্কতা। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লুইজিয়ানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার ঘরবাড়িতে এখনো কোন বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। নিউ অরলিন্সে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি রয়েছে।
ক্রান্তীয় ঝড় আইডার অবশিষ্টাংশের প্রভাবে নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে আবহাওয়ার এ ‘চরম রূপ’ দেখা যাচ্ছে। চার মাত্রার হারিকেনের শক্তি নিয়ে আঘাত হানা আইডা কয়েকদিন আগেই লুইজিয়ানার দক্ষিণে তাণ্ডব চালায়। পরে এটি দুর্বল হয়ে ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনকে বন্যার এ ভয়াবহতার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি, এনবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমস।