প্রচ্ছদ

ইসরায়েলের হামলায় মৃত্যুপুরী গাজা, শিকার গণমাধ্যমও

  |  ১৭:৪১, মে ১৫, ২০২১
www.adarshabarta.com

আদর্শবার্তা ডেস্ক :

ফিলিস্তিনের জেরুজালেম ও গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। ছবি : রয়টার্স
ফিলিস্তিনের জেরুজালেম ও গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। আজ শনিবার টানা ষষ্ঠ দিনের মতো হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গত সোমবার শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন হাজারের বেশি মানুষ। পাশাপাশি বহু ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে হামাসের রকেট হামলায় এ পর্যন্ত নয় ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন সেনাবাহিনীর সদস্য রয়েছে।

শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার একটি শরণার্থী শিবিরেও বোমা হামলা করেছে। এতে অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে আটটিই শিশু।

অন্যদিকে গাজায় হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ফিলিস্তিনিরা। এতে অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

এদিন ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় একটি বহুতল ভবন মুহূর্তেই মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বিমান থেকে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোমা ফেলা হয় ভবনটিতে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ওই ভবনটিতে আল জাজিরা ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) অফিস ছিল। পাশাপাশি সেটি আবাসিক ভবন হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।

ওই ঘটনার ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, বোমা হামলার পর ভবনটি মাটিতে ভেঙে পড়ছে। ভবনটির ধ্বংসস্তূপ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভবনটিতে এপির ব্যুরো কার্যালয় ছিল।

গাজার অফিসটিতে ১১ বছর ধরে কাজ করা আল জাজিরার সাংবাদিক সাফাওয়াত আল খালুত এক প্রতিক্রিয়া বলেছেন, দুই সেকেন্ডের মধ্যেই ভবনটি মাটির সঙ্গে মিশে যায়। তিনি বলেন, ‘আমি ১১ বছর ধরে সেখানে কাজ করছি। আমি অনেক ঘটনা ভবনটি থেকে কাভার করেছি, আমরা পেশাদার জীবনযাপন করেছি, দুই সেকেন্ডের মধ্যে এখন সবকিছুই হারিয়ে গেল।’

এদিকে জেরুজালেম ও গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার ইস্যুতে রোববার জরুরি বৈঠকে বসছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আরব নিউজের খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের উদ্যোগে এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওআইসিভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে বক্তব্য দেবেন।

এদিকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত থামাতে আলোচনার জন্য ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দূত হাদি আমর।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুইপক্ষকে অস্ত্র বিরতিতে রাজি করাতে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জাতিসংঘের দূতের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।

সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্বের কূটনীতিকদের আহ্বানের মধ্যেই শনিবার তেল আবিবে পৌঁছালেন হাদি আমর। রোববার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে তাঁর এই সফর ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ হয়ে উঠেছে।

ইসরায়েলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানিয়েছে, হাদি আমরের এই সফরের লক্ষ্য হলো ‘একটি টেকসই শান্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনাকে শক্তিশালী করা।’

তবে মধ্যস্থতাকারীরা এখন পর্যন্ত ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি নেতাদের একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে রাজি করাতে পারেননি।

অন্যদিকে হাদি আমরের তেল আবিব সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না প্রবীণ ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ হানান আশরাবী। হাদি আমরের এই সফর লড়াই থামতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি।

বিবিসিকে হানান বলেন, তিনি মনে করেন না যে হাদি অনেক কিছুই করতে পারেন। হানান আশরাবী এও মনে করিয়ে দেন যে, গত সপ্তাহেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, ‘যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ’ গাজায় অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুরো সপ্তাহ অপেক্ষার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাঠানো তৃতীয় নয়, বরং চতুর্থ স্তরের সরকারি কর্মকর্তার কথা ইসরায়েল শুনবে না বলেও মনে করেন তিনি।